ওয়ালটনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু শ্রীলঙ্কার বাজারে

অবশেষে শ্রীলঙ্কার বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এর মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হয়ে ওঠার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগোল ওয়ালটন। পরিবেশক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, দেশটিতে সহস্রাধিক সেলস আউটলেটে ওয়ালটন পণ্য বিক্রি হবে।

শনিবার (১৮ মে ২০২৫) সন্ধ্যায় কলম্বোর সিনামন লাইফ হোটেলে ‘গ্র্যান্ড লঞ্চিং অব ওয়ালটন ব্র্যান্ড’ শীর্ষক এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ওয়ালটন।

শ্রীলঙ্কার খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান এবং ওয়ালটনের ব্যবসায়িক অংশীদার ‘মনিক ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড’ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মনিক ট্রেডিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ওয়াসালা মাদুওয়ান্থা আরিয়াপালা, শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মো. জান্নাতুল হাবিব, শ্রীলঙ্কার জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক থিসারা পেরেরা এবং ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নিশাত তাসনিম শুচি। অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার চার শতাধিক পরিবেশক ব্যবসায়ীও অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইভেন্টে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় ওয়ালটন ব্র্যান্ড আগে থেকেই পরিচিত। মনিক ট্রেডিং-এর মতো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গী হিসেবে পাওয়ায় তারা আনন্দিত। তিনি পণ্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের বিষয় তুলে ধরেন। ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও জানান, বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে অটোমেশন ও পণ্যভিত্তিক আলাদা রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) সেন্টারের পাশাপাশি চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ায়ও আরঅ্যান্ডআই সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর চাহিদা, আবহাওয়া এবং মানদণ্ড অনুযায়ী ওয়ালটন পণ্যের ডিজাইন, প্রযুক্তি ও গুণগত মানের নিয়মিত উন্নয়ন করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী রেসিডেন্সিয়াল এসি এবং বিশ্বের প্রথম ভয়েস কন্ট্রোল এসি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও ওয়ালটনের ফ্রিজ, এসি, টিভিসহ অন্যান্য পণ্যে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার প্রযুক্তি, আইওটি, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো নিজস্ব উদ্ভাবনী ও আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে।

বৈশ্বিক বাজারে ওয়ালটনের সম্প্রসারণের কথা তুলে ধরে এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, বর্তমানে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও ইউরোপের ৫০টিরও বেশি দেশে ওয়ালটন ব্যবসা করছে এবং এশিয়ার দেশগুলোতে এই পণ্যের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। শ্রীলঙ্কাতেও ওয়ালটন দ্রুত ক্রেতাদের মন জয় করে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শ্রীলঙ্কায় ওয়ালটনের ব্যবসায়িক অংশীদার ‘মনিক ট্রেডিং’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ওয়াসালা মাদুওয়ান্থা আরিয়াপালা বলেন, পণ্যের গুণগত মান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়, স্থায়িত্ব এবং প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে ওয়ালটন ব্র্যান্ড এগিয়ে রয়েছে। খুব শীঘ্রই ওয়ালটনের পণ্য শ্রীলঙ্কার এক হাজারের বেশি সেলস আউটলেটে পাওয়া যাবে এবং দ্রুতই ক্রেতাদের মন জয় করে নেবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মো. জান্নাতুল হাবিব বলেন, শ্রীলঙ্কার বাজারে বাংলাদেশি টেক জায়ান্ট ওয়ালটনের ব্যবসা সম্প্রসারণ নিঃসন্দেহে আনন্দের খবর। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ব বাজারে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনের সিইও নিশাত তাসনিম শুচি বলেন, ওয়ালটনকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে তারা কাজ করছেন এবং শ্রীলঙ্কায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পূরণের দিকে আরও এক ধাপ এগোলেন। বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কাতেও ওয়ালটন সিংহভাগ ক্রেতার আস্থা ও মন জয় করে মার্কেট লিডার হতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার বাজারে ওয়ালটনের শক্তিশালী অবস্থান তৈরির জন্য ইতোমধ্যে একটি শক্তিশালী বিক্রয়, বিপণন ও বিক্রয়োত্তর সেবা কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।