জেরুজালেম, ১৮ জুন ২০২৫: ইরানের সাম্প্রতিক টানা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো তীব্র চাপের মুখে পড়েছে। গত চারদিন ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় রাখায় ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্রভিত্তিক ইন্টারসেপ্টর ভাণ্ডার দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে জানা গেছে। এটি কেবল ইসরায়েল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মজুদের জন্যও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
সোমবার (১৬ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান এবং তাদের আঞ্চলিক মিত্রদের লাগাতার হামলার কারণে ইসরায়েল তাদের তিন স্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে জোরালোভাবে ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। এর ফলে ব্যয়বহুল এবং সীমিত সরবরাহের অ্যারো (Arrow) এবং ডেভিড’স স্লিং (David’s Sling) ইন্টারসেপ্টরগুলির দ্রুত ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তবে শুধু ইসরায়েল নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মজুদও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।
ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে:
- আয়রন ডোম (Iron Dome): ছোট পাল্লার রকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর।
- ডেভিড’স স্লিং (David’s Sling): ভারী রকেট ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়।
- অ্যারো-২ ও অ্যারো-৩ (Arrow-2 & Arrow-3): বায়ুমণ্ডলের বাইরের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম।
তবে, অ্যারো ইন্টারসেপ্টরগুলো উৎপাদনে দীর্ঘ সময় লাগে, যে কারণে এর মজুদ দ্রুত কমে যাচ্ছে। প্রাক্তন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ড্যান ক্যালডওয়েল এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এই ইন্টারসেপ্টরগুলো ব্যয়বহুল, আর বড় পরিসরে উৎপাদনও কঠিন। হুতিদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ এবং ইরানের আগের হামলায় এর অনেক মজুদ ইতোমধ্যেই খরচ হয়ে গেছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, গত ১৩ জুন থেকে ইরান ইসরায়েলের দিকে কমপক্ষে ৩৭০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়কেই প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে শিগগিরই সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে হতে পারে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মহল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।