আন্তর্জাতিক, ১৮ জুন ২০২৫: ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের উত্তাপের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপের কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটির উদ্দেশে গত তিন দিনে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমান উড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ট্র্যাকিং সংস্থা ফ্লাইটরাডার ২৪ এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ইএসএস নিমিৎজ দক্ষিণ চীন সাগর থেকে যাত্রাপথ পরিবর্তন করে মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।
বিবিসির নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা গেছে, কেসি-১৩৫ নামের বিমানগুলো মূলত ট্যাংকার বিমান; অর্থাৎ অপারেশনে ব্যবহৃত যুদ্ধ ও বোমাবাহী বিমানগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করাই এদের প্রধান কাজ। স্পেন, স্কটল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের মার্কিন ঘাঁটিগুলোর উদ্দেশে এই বিমানগুলো উড়ে গেছে বলে বিবিসি জানতে পেরেছে।
সাধারণ সময়ে এটি মনোযোগ আকর্ষণের মতো কোনো ঘটনা না হলেও, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত পরিস্থিতিতে মার্কিন ঘাঁটি থেকে তিন দিনে ৩০টি ট্যাংকার যুদ্ধবিমানের ইউরোপের সামরিক ঘাঁটির উদ্দেশে উড়ে যাওয়াকে ‘অত্যন্ত অস্বাভাবিক’ বলে মনে করছেন একাধিক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
প্রসঙ্গত, ইরানে ইসরায়েল সংঘাতে এখনও সরাসরি অংশ না নিলেও যুক্তরাষ্ট্র যে এর সঙ্গে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট— তা ইতোমধ্যে প্রকাশিত। ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় আসার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ডেডলাইন দিয়েছিলেন, তা অতিক্রমের একদিন পরেই ইরানে বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিঙ্কট্যাংক সংস্থা রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিস ইনস্টিটিউট (রুসি)-এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জাস্টিন ব্রঙ্ক বিবিসিকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাতের বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে ইতোমধ্যে আঁচ পাওয়া যাচ্ছে যে সামনের সপ্তাহগুলোতে তা আরও ব্যাপক আকার নেবে; আর সংঘাত ঘনীভূত হলে যে কোনো সময় তাতে যে কোনো সময় ঢুকে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র। মাত্র তিন দিনের মধ্যে ৩৯টি ট্যাংকার বিমানের যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে উড়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে।”
এদিকে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের চতুর্থ দিনে দক্ষিণ চীন সাগরে যাত্রাপথ পরিবর্তন করে মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানবাহী রণতরী ইএসএস নিমিৎজ। এটি বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ও সমরাস্ত্র সজ্জিত রণতরী হিসেবে পরিচিত। এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।