রাঙামাটি, ২০ জুন ২০২৫: রাঙামাটিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। আজ শুক্রবার (২০ জুন) দুপুরে শহরের বনরূপা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কর্মীদের মধ্যে তীব্র ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং অন্তত পাঁচজন আহত হন।
ঘটনার সূত্রপাত:
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধ ঘোষিত) সিনিয়র সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন কায়সার একটি ট্যাক্সিতে করে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কর্মীরা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করে এবং তার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে কায়সারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
রাঙামাটি কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাহেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে কায়সারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষ:
ঘটনার সময় ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে অপ্রত্যাশিত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জানা যায়, ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ—ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের সময় শিবিরের একজন সদস্য তাদের দুই নেতাকে ‘অকারণে’ আঘাত করেন।
রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাদুর শাহ বলেন, “সবাই যখন কায়সারকে মারছিল, তখন শিবিরের এক কর্মী আমাকে ও আকাশকে বিনা কারণে ঘুষি মারে। তখনই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।” এরপর ছাত্রদল কর্মীরা তখন শিবিরকর্মীদের ওপর পাল্টা হামলা চালায়, এতে শিবিরের অন্তত পাঁচজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে যায় এবং উত্তেজিত কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
নেতৃবৃন্দের প্রতিক্রিয়া:
জেলা জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নেতা অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ বলেন, “ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী কায়সারকে আটকের সময় চেনার অভাবে ছাত্রদল-শিবিরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি।”
রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদও একই সুরে বলেন, “ঘটনার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবুঝির কারণে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা বসে সমাধানের চেষ্টা করছি।”