Hi

১২:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পশ্চিমবঙ্গ আনন্দধারা প্রকল্পের এস সি কর্মীদের স্থায়ী স্বীকৃতি ও বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ-ডেপুটেশন

কলকাতা, ২০ জুন ২০২৫: পশ্চিমবঙ্গ আনন্দধারা প্রকল্পে কর্মরত এস সি (সংঘ কো-অর্ডিনেটর) মহিলা কর্মীরা আজ শুক্রবার (২০ জুন) স্থায়ী সরকারি স্বীকৃতি ও বিভিন্ন দাবি নিয়ে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও ডেপুটেশন কর্মসূচি পালন করেছেন। কয়েকশো মহিলা কর্মী দুপুর বারোটায় সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে জমায়েত হন। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গ এসআরএলএম, এস সি কর্মী ইউনিয়নের নেতৃত্বে মিছিলটি এস এন ব্যানার্জী রোড ধরে স্লোগান দিতে দিতে ধর্মতলা ওয়াই চ্যানেলে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিল ধর্মতলা ডরিনা ক্রসিং-এ পৌঁছালে কিছুক্ষণের জন্য সমস্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে চতুর্দিকের রাস্তায় গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। ওয়াই চ্যানেলে পৌঁছানোর পর কর্মীরা তাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং মিশন ডিরেক্টরের নিকট ডেপুটেশন দিতে যান।

ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ছয় শতাধিক কর্মী এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। তারা অভিযোগ করেন, গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করার কাজে যুক্ত আনন্দধারা প্রকল্পে এস সি কর্মীদের ব্লক স্তরে পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি পঞ্চায়েতে একজন করে সিলেকশন করা হলেও, তাদের কোনো নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। তাদের মাসিক নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না এবং সংঘের অধীনে রাখা হলেও সব কাজ দেখভাল করেন সরকারি আধিকারিকরা। কোনো সংঘের অনিয়ম বা বেআইনি কাজের প্রতিবাদ জানালে কর্মীদের কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং অভিযোগ জানানোর কোনো জায়গা থাকে না। তারা দাবি করেন, এভাবে বহু কর্মীর কাজ ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এর পেছনে স্থানীয় সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতির হস্তক্ষেপ জড়িত। এস সি কর্মীরা স্বনির্ভর প্রকল্পে কাজ করলেও নিজেরাই পরনির্ভর হয়ে আছেন।

বিক্ষোভকারীরা তাদের দশ দফা দাবি তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  1. এস সি কর্মীদের চুক্তি পদ্ধতি বাতিল করে সরকারি স্বীকৃতিসহ স্থায়ী নিয়োগপত্র দিতে হবে।
  2. কর্মীদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে অনারিয়াম এবং অতিরিক্ত কাজে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিতে হবে।
  3. বাজারদর অনুযায়ী প্রতিবছর অনারিয়াম বৃদ্ধি করতে হবে।
  4. কর্মীদের নিয়মিত ট্রেনিং দিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
  5. যে সমস্ত কর্মীদের বিনা কারণে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের পুনরায় কাজে নিয়োগ করতে হবে।
  6. কর্মীদের গাড়ি ভাড়া, মোবাইল খরচ, ইএসআই সুবিধা ও মাতৃত্বকালীন সবেতন ছুটি দিতে হবে।
  7. কর্মীদের সরকারি ছুটি ও অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে।
  8. কর্মীদের অবসরকালীন ৫ লক্ষ টাকা সহায়তা ও পেনশন চালু করতে হবে।
  9. প্রকল্পকে দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

কর্মীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকার যদি দাবি পূরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে আগামী দিনে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

জামালগঞ্জে ৪ ব্যাংকের উদ্যোগে প্রকাশ্যে কৃষি ঋণ বিতরণ: ১১ কৃষক পেলেন পৌনে ১৮ লাখ টাকা

পশ্চিমবঙ্গ আনন্দধারা প্রকল্পের এস সি কর্মীদের স্থায়ী স্বীকৃতি ও বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ-ডেপুটেশন

আপডেট : ০৩:৩০:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

কলকাতা, ২০ জুন ২০২৫: পশ্চিমবঙ্গ আনন্দধারা প্রকল্পে কর্মরত এস সি (সংঘ কো-অর্ডিনেটর) মহিলা কর্মীরা আজ শুক্রবার (২০ জুন) স্থায়ী সরকারি স্বীকৃতি ও বিভিন্ন দাবি নিয়ে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও ডেপুটেশন কর্মসূচি পালন করেছেন। কয়েকশো মহিলা কর্মী দুপুর বারোটায় সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে জমায়েত হন। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গ এসআরএলএম, এস সি কর্মী ইউনিয়নের নেতৃত্বে মিছিলটি এস এন ব্যানার্জী রোড ধরে স্লোগান দিতে দিতে ধর্মতলা ওয়াই চ্যানেলে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিল ধর্মতলা ডরিনা ক্রসিং-এ পৌঁছালে কিছুক্ষণের জন্য সমস্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে চতুর্দিকের রাস্তায় গাড়ির দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। ওয়াই চ্যানেলে পৌঁছানোর পর কর্মীরা তাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং মিশন ডিরেক্টরের নিকট ডেপুটেশন দিতে যান।

ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ছয় শতাধিক কর্মী এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। তারা অভিযোগ করেন, গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করার কাজে যুক্ত আনন্দধারা প্রকল্পে এস সি কর্মীদের ব্লক স্তরে পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি পঞ্চায়েতে একজন করে সিলেকশন করা হলেও, তাদের কোনো নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। তাদের মাসিক নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না এবং সংঘের অধীনে রাখা হলেও সব কাজ দেখভাল করেন সরকারি আধিকারিকরা। কোনো সংঘের অনিয়ম বা বেআইনি কাজের প্রতিবাদ জানালে কর্মীদের কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং অভিযোগ জানানোর কোনো জায়গা থাকে না। তারা দাবি করেন, এভাবে বহু কর্মীর কাজ ছাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এর পেছনে স্থানীয় সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতির হস্তক্ষেপ জড়িত। এস সি কর্মীরা স্বনির্ভর প্রকল্পে কাজ করলেও নিজেরাই পরনির্ভর হয়ে আছেন।

বিক্ষোভকারীরা তাদের দশ দফা দাবি তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  1. এস সি কর্মীদের চুক্তি পদ্ধতি বাতিল করে সরকারি স্বীকৃতিসহ স্থায়ী নিয়োগপত্র দিতে হবে।
  2. কর্মীদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে অনারিয়াম এবং অতিরিক্ত কাজে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিতে হবে।
  3. বাজারদর অনুযায়ী প্রতিবছর অনারিয়াম বৃদ্ধি করতে হবে।
  4. কর্মীদের নিয়মিত ট্রেনিং দিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।
  5. যে সমস্ত কর্মীদের বিনা কারণে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের পুনরায় কাজে নিয়োগ করতে হবে।
  6. কর্মীদের গাড়ি ভাড়া, মোবাইল খরচ, ইএসআই সুবিধা ও মাতৃত্বকালীন সবেতন ছুটি দিতে হবে।
  7. কর্মীদের সরকারি ছুটি ও অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে।
  8. কর্মীদের অবসরকালীন ৫ লক্ষ টাকা সহায়তা ও পেনশন চালু করতে হবে।
  9. প্রকল্পকে দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।

কর্মীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকার যদি দাবি পূরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, তাহলে আগামী দিনে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।