Hi

০৫:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি: তেহরানে বিজয়ের উল্লাস, ‘শহীদদের রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা’ উদযাপনে জনসমুদ্র!

তেহরান, ২৬ জুন ২০২৫: বারো দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পর তেহরানের ইনকিলাব স্কয়ার যেন বিজয়ের এক উন্মুক্ত জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। হাজারো মানুষ ইরানের পতাকা হাতে এবং শহীদদের ছবি বুকে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। উল্লাস আর শোকের এক অনন্য সম্মিলন দেখা গেল এই ঐতিহাসিক স্কয়ারে। নারী-পুরুষ, তরুণ-প্রবীণ, এমনকি শিশুদের অংশগ্রহণে এই উৎসব যেন ইরানি জাতির একতাবদ্ধ বিজয়চেতনার বহিঃপ্রকাশ।

এই সুখবরের বিপরীতে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ইরানবিরোধী আগ্রাসনের পেছনে থাকা আমেরিকা প্রবাসী রেজা পাহলভি, যিনি নিজেকে ইরানের “ভবিষ্যৎ” ভাবতেন, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মেয়ে জানায়, যুদ্ধবিরতির খবর পাওয়ার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ যেন ইতিহাসের এক পরিহাস—যেখানে ইরানের বিজয়ে শোকাহত হয়ে ভেঙে পড়ছেন সেই পাহলভি পরিবার, যারা অতীতে দেশটিকে পশ্চিমা শক্তির হাতে তুলে দিয়েছিল।

ইরানিরা জানিয়ে দিয়েছে—পাহলভি রাজতন্ত্রের দিন শেষ। ইরানি মাটি ও শহীদদের রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা আর কোনোদিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে মাথানত করবে না। ইনকিলাব স্কয়ারে উচ্চারিত হয়েছে প্রাণবন্ত স্লোগান—“ইসরাইল নিপাত যাক”, “যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হোক”। এ শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, দীর্ঘদিনের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে এক ঘনীভূত প্রতিরোধের স্ফূরণ।

উৎসবমুখর ইনকিলাব স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ ইরানের পতাকা ও ইসলামি বিপ্লবের প্রতীক হাতে রাস্তায় নেমেছে। শিশুদের পর্যন্ত এ আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়নি। বাবার কাঁধে কিংবা মায়ের কোলে শিশুরাও একাত্ম হয়েছে এ জাতীয় চেতনায়। এসব দৃশ্য শুধু তেহরান নয়, গোটা ইরানকে একাকার করেছে বিজয়ের আনন্দে।

শুধু রাজধানী নয়, ইরানের অন্যান্য শহরেও চলছে বিজয় মিছিল। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, এই বাহিনী শুধু ইসরায়েলের অপরাধের প্রতিশোধই নেয়নি, বরং ইরানের আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতাকেও রক্ষা করেছে।

ইরানের এ বিজয় উদযাপন সীমান্ত ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। লেবাননের দাহিয়েতে আয়াতুল্লাহ খামেনির বিশাল ব্যানার টানানো হয়েছে। গাজা, ইয়েমেন, এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত ইরানপ্রেমীরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজয়ের বার্তা ছড়িয়েছেন। কেউ আনন্দাশ্রু ঝরিয়েছেন, কেউবা জয়মিছিলে অংশ নিয়েছেন।

ট্যাগস: ইরান, ইসরায়েল, যুদ্ধবিরতি, ইনকিলাব স্কয়ার, তেহরান, বিজয় উদযাপন, রেজা পাহলভি, মধ্যপ্রাচ্য, ইসলামী বিপ্লব, স্বাধীনতা।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

সাবেক সিইসি গ্রেপ্তার: ‘সরকারের ব্যর্থতার ফলেই জনরোষ’, বলছেন হাসনাত আবদুল্লাহ

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি: তেহরানে বিজয়ের উল্লাস, ‘শহীদদের রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা’ উদযাপনে জনসমুদ্র!

আপডেট : ০৩:৫৮:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

তেহরান, ২৬ জুন ২০২৫: বারো দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পর তেহরানের ইনকিলাব স্কয়ার যেন বিজয়ের এক উন্মুক্ত জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। হাজারো মানুষ ইরানের পতাকা হাতে এবং শহীদদের ছবি বুকে নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। উল্লাস আর শোকের এক অনন্য সম্মিলন দেখা গেল এই ঐতিহাসিক স্কয়ারে। নারী-পুরুষ, তরুণ-প্রবীণ, এমনকি শিশুদের অংশগ্রহণে এই উৎসব যেন ইরানি জাতির একতাবদ্ধ বিজয়চেতনার বহিঃপ্রকাশ।

এই সুখবরের বিপরীতে ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ইরানবিরোধী আগ্রাসনের পেছনে থাকা আমেরিকা প্রবাসী রেজা পাহলভি, যিনি নিজেকে ইরানের “ভবিষ্যৎ” ভাবতেন, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মেয়ে জানায়, যুদ্ধবিরতির খবর পাওয়ার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ যেন ইতিহাসের এক পরিহাস—যেখানে ইরানের বিজয়ে শোকাহত হয়ে ভেঙে পড়ছেন সেই পাহলভি পরিবার, যারা অতীতে দেশটিকে পশ্চিমা শক্তির হাতে তুলে দিয়েছিল।

ইরানিরা জানিয়ে দিয়েছে—পাহলভি রাজতন্ত্রের দিন শেষ। ইরানি মাটি ও শহীদদের রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা আর কোনোদিন সাম্রাজ্যবাদের কাছে মাথানত করবে না। ইনকিলাব স্কয়ারে উচ্চারিত হয়েছে প্রাণবন্ত স্লোগান—“ইসরাইল নিপাত যাক”, “যুক্তরাষ্ট্র ধ্বংস হোক”। এ শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, দীর্ঘদিনের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে এক ঘনীভূত প্রতিরোধের স্ফূরণ।

উৎসবমুখর ইনকিলাব স্কয়ারে হাজার হাজার মানুষ ইরানের পতাকা ও ইসলামি বিপ্লবের প্রতীক হাতে রাস্তায় নেমেছে। শিশুদের পর্যন্ত এ আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়নি। বাবার কাঁধে কিংবা মায়ের কোলে শিশুরাও একাত্ম হয়েছে এ জাতীয় চেতনায়। এসব দৃশ্য শুধু তেহরান নয়, গোটা ইরানকে একাকার করেছে বিজয়ের আনন্দে।

শুধু রাজধানী নয়, ইরানের অন্যান্য শহরেও চলছে বিজয় মিছিল। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, এই বাহিনী শুধু ইসরায়েলের অপরাধের প্রতিশোধই নেয়নি, বরং ইরানের আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতাকেও রক্ষা করেছে।

ইরানের এ বিজয় উদযাপন সীমান্ত ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। লেবাননের দাহিয়েতে আয়াতুল্লাহ খামেনির বিশাল ব্যানার টানানো হয়েছে। গাজা, ইয়েমেন, এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত ইরানপ্রেমীরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজয়ের বার্তা ছড়িয়েছেন। কেউ আনন্দাশ্রু ঝরিয়েছেন, কেউবা জয়মিছিলে অংশ নিয়েছেন।

ট্যাগস: ইরান, ইসরায়েল, যুদ্ধবিরতি, ইনকিলাব স্কয়ার, তেহরান, বিজয় উদযাপন, রেজা পাহলভি, মধ্যপ্রাচ্য, ইসলামী বিপ্লব, স্বাধীনতা।