ঢাকা, ১২ জুলাই ২০২৫: মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগকে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর যখন দেশজুড়ে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে, তখন সরাসরি মাঠে নেমেছেন র‍্যাব মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান! আজ শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “আমাদের কাছে অপরাধীর পরিচয় শুধু অপরাধী। সে যেই দলের হোক, যত বড় প্রভাবশালী হোক, কোনো ছাড় নেই। আমরা অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব!”

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, চলমান অভিযান এবং গুমচেষ্টা মামলাসহ সাম্প্রতিক বিষয়াদি নিয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব ডিজি বলেন, “মিটফোর্ড এলাকার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এ মামলার ছায়া তদন্ত চলছে। এখনও বিস্তারিত কিছু বলার সময় আসেনি, তবে বাকি জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। সেনাবাহিনী-পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থাও আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় চাঁদাবাজি কিংবা ব্যবসায়িক বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে—এটা প্রাথমিক পর্যায়ের ধারণা।” র‍্যাব প্রধানের এই দৃঢ় ঘোষণা অপরাধীদের হৃদয়ে কাঁপন ধরাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই গুছিয়ে আনার দাবি করে তিনি বলেন, “আমাদের নিয়মিত টহল, গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযানে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। আশা করছি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে একটি সহিংসতামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবো।”

সম্প্রতি গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব ডিজি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “কোনোভাবেই আইন হাতে তুলে নেয়া যাবে না। মব সন্ত্রাস করে অন্যায়ভাবে কোনো দাবি আদায় করার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

এছাড়া, ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইটে বোমা থাকার মিথ্যা হুমকি দিয়ে ফোন করায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন র‍্যাব মহাপরিচালক। তিনি জানান, “এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমন গুজব ছড়িয়ে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার যে কোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে র‍্যাব সজাগ রয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে র‍্যাব ডিজি আরও একটি চাঞ্চল্যকর খবর দেন! তিনি জানান, চট্টগ্রামে স্ত্রীকে হত্যার পর মরদেহ গুমের চেষ্টার মামলার প্রধান আসামিকেও গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। তিনি বলেন, “এটি একটি নির্মম ঘটনা। দীর্ঘ সময় ধরে পলাতক থাকা আসামিকে প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে পেরেছি। আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”

র‍্যাব মহাপরিচালকের এই কড়া বার্তা কি অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে পারবে? দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি সত্যিই নিয়ন্ত্রণের দিকে যাচ্ছে? জনগণের চোখ এখন র‍্যাবের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

ট্যাগস: #র‍্যাব #র‍্যাবডিজি #মিটফোর্ডহত্যা #অপরাধী #আইনশৃঙ্খলা #চাঁদাবাজি #গণপিটুনি #বোমাআতঙ্ক #চট্টগ্রামহত্যা #ব্রেকিংনিউজ #বাংলাদেশেরআইনশৃঙ্খলা