ব্রেকিং: হাসপাতালের ভেতরেই ধুন্ধুমার! ডেন্টাল সার্জন ও প্যাথলজি ডাক্তার হাতাহাতি, তোলপাড় জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল!
জামালপুর, ২৩ জুন ২০২৫ – জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালের ভেতরেই দুই কর্তব্যরত চিকিৎসকের মধ্যে প্রকাশ্য হাতাহাতির ঘটনা হাসপাতালজুড়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। সোমবার দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ মিনিটের দিকে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে এবং জড়িতদের শান্ত থাকার আহ্বান জানায়।
ঘটনার সূত্রপাত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের কর্মচারীরা জানান, হাসপাতালের ডেন্টাল সার্জন ডাঃ ইকরামুল হক হিটলু তার চেম্বার থেকে উঠে এসে প্যাথলজি বিভাগের ডাঃ তরিকুল ইসলাম রনিকে মারধর করেন। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার পরপরই প্যাথলজি বিভাগসহ হাসপাতালের অন্যান্য কর্মচারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং প্রতিবাদে তাদের কাজ বন্ধ করে দেন। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে।
জড়িত ডাক্তারদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
মারামারির শিকার ডাঃ তরিকুল ইসলাম রনি ঘটনার বিস্তারিত কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি কিছু বলব না। যা বলার আমার কর্তৃপক্ষ বলবেন। আমার সাথে যা হয়েছে সে ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগতভাবে মামলা করব।” তবে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার এবং হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন, যাতে সাধারণ রোগীরা কোনো ভোগান্তির শিকার না হন।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত ডাঃ ইকরামুল হক হিটলু তালুকদার ঘটনার ভিন্ন একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম চলছে। তিনি এই বিষয়ে কথা বলতে ডাঃ রনির কক্ষে যান এবং তাকে এই অনিয়ম বন্ধের দাবি জানান। ডাঃ হিটলু অভিযোগ করেন, তার দাবি জানানোর পরই ডাঃ রনি তাকে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন এবং এর প্রতিবাদ করলেই তাদের মধ্যে “একটু হাতাহাতি” হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ও মানবাধিকার কর্মীদের তৎপরতা
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন, মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং দুই পক্ষের মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করেন। হাসপাতালের মতো একটি জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনায় রোগীদের সেবায় বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই গুরুতর ঘটনায় দ্রুত একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ঘটনা হাসপাতালের শৃঙ্খলা এবং চিকিৎসা পেশার পবিত্রতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তৈরি করেছে, যা জনমনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।