Hi

০৯:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা চাপের মুখে

সরকার পতনের পর নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরাপদে ভারতে অবস্থান করলেও, অবৈধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে দেশটিতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা এখন চাপের মুখে পড়েছেন। ভারতে আশ্রয় নেওয়া লক্ষাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।

শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত সরকার সম্প্রতি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের আটক করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। যদিও এখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই পুশব্যাকের আওতায় আসেননি, তবে শীঘ্রই তাদের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে জানা গেছে।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আরও দুই-তিন মাস সময় দিতে চান। তবে, আগামী আগস্ট মাস থেকে ভারত সরকার গ্রেপ্তার অভিযান আরও জোরদার করবে। দেশটির সরকার পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদেরও ভারত ছাড়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অরুণাচল, মেঘালয়সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রায় এক লাখ ৪৩ হাজার নেতা আশ্রয় নিয়েছেন। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা, দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি), মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং সহযোগী ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, গত ১০ মে অন্তর্বর্তী সরকার বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। এই পরিস্থিতিতে দলটির পালিয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের দেশে ফেরা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে ভারত সরকার কোনোভাবেই তাদের দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের রাখতে ইচ্ছুক নয়।

পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ফেরার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় তাদের অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতে আশ্রয় নেওয়া একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, দেশে ফেরার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি এবং তাদের জীবনের ঝুঁকি কাটেনি। ফলে ভারত ত্যাগ করা তাদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এরই মধ্যে প্রায় ৫০ জন বড় নেতা ভারত ছেড়ে আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন এবং বাকিরাও পশ্চিমা দেশগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে কোনো নেতাই দেশে ফেরার সাহস দেখাচ্ছেন না।

গত ৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা নানা উপায়ে প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অনেক নেতা পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন এবং ভারত সরকারও সেই সময় তাদের প্রবেশের সুযোগ দিয়েছিল। এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও ভারতে আশ্রয় পেয়েছিলেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত ছাড়ার চাপ আওয়ামী লীগের আশ্রয় নেওয়া সকল স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানা-হেঁচড়া করায় আশুলিয়া থেকে নাসিম ভূঁইয়া গ্রেফতার

ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা চাপের মুখে

আপডেট : ০৬:১০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

সরকার পতনের পর নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে নিরাপদে ভারতে অবস্থান করলেও, অবৈধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে দেশটিতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা এখন চাপের মুখে পড়েছেন। ভারতে আশ্রয় নেওয়া লক্ষাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।

শনিবার, ১৭ মে ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত সরকার সম্প্রতি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে, বিভিন্ন রাজ্য থেকে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের আটক করে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। যদিও এখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই পুশব্যাকের আওতায় আসেননি, তবে শীঘ্রই তাদের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে জানা গেছে।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আরও দুই-তিন মাস সময় দিতে চান। তবে, আগামী আগস্ট মাস থেকে ভারত সরকার গ্রেপ্তার অভিযান আরও জোরদার করবে। দেশটির সরকার পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদেরও ভারত ছাড়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অরুণাচল, মেঘালয়সহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রায় এক লাখ ৪৩ হাজার নেতা আশ্রয় নিয়েছেন। এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতা, দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি), মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং সহযোগী ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, গত ১০ মে অন্তর্বর্তী সরকার বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। এই পরিস্থিতিতে দলটির পালিয়ে যাওয়া নেতাকর্মীদের দেশে ফেরা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে ভারত সরকার কোনোভাবেই তাদের দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের রাখতে ইচ্ছুক নয়।

পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ফেরার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় তাদের অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতে আশ্রয় নেওয়া একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, দেশে ফেরার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি এবং তাদের জীবনের ঝুঁকি কাটেনি। ফলে ভারত ত্যাগ করা তাদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এরই মধ্যে প্রায় ৫০ জন বড় নেতা ভারত ছেড়ে আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন এবং বাকিরাও পশ্চিমা দেশগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে কোনো নেতাই দেশে ফেরার সাহস দেখাচ্ছেন না।

গত ৫ আগস্টের পরবর্তী পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা নানা উপায়ে প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অনেক নেতা পরিবার নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন এবং ভারত সরকারও সেই সময় তাদের প্রবেশের সুযোগ দিয়েছিল। এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও ভারতে আশ্রয় পেয়েছিলেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত ছাড়ার চাপ আওয়ামী লীগের আশ্রয় নেওয়া সকল স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।