মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, যিনি নিষিদ্ধ ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ আমলের এমপি ছিলেন, ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর টানা তিন মাস সিংগাইরে তার ভাইয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। এই তিন মাসে তিনি একদিনও বাড়ির বাইরে বের হননি।
তার ভাই এবারত হোসেন নিজেই এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মমতাজের তৃতীয় স্বামী ডা. এসএম মঈন হাসানও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। এর আগে, সোমবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে তিনি চার দিনের পুলিশি রিমান্ডে রয়েছেন।
এবারত হোসেন জানান, মমতাজ ৫ আগস্টের পরের দিন থেকে টানা তিন মাস সিংগাইরের চরদুর্গাপুরে তার বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। তার স্ত্রী ও সন্তান ছাড়া পাশের বাড়ির কেউই মমতাজের আত্মগোপনের বিষয়টি জানতে পারেনি। এই সময়ে তিনি দলের নেতাকর্মীসহ সকল শুভাকাঙ্ক্ষীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ বন্ধ রাখেন। প্রয়োজনে কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে এবারত হোসেনের মাধ্যমে করতেন।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, মমতাজের ভাই এবারতের বাড়িসহ আশপাশের এলাকা সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। বাইরের কোনো আগন্তুক বাড়ির আঙ্গিনায় প্রবেশ করলেই তাদের জানানো হতো যে বাড়িতে কেউ নেই। সিংগাইরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজর এড়িয়ে মমতাজ বেশ নিরাপদে তিন মাস তার ভাইয়ের বাড়িতে কাটিয়েছেন।
এবারত হোসেন আরও জানান, মমতাজের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নিপার মাধ্যমে নিপার নামেই ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়। একদিন মধ্যরাতে মমতাজ বোরকা পরে গ্রামের বাড়ি থেকে বের হয়ে কাকপক্ষীকে না জানিয়ে মাইক্রোবাসে সরাসরি ধানমন্ডির ভাড়া বাসায় ওঠেন। গাড়ির গ্লাস কালো রঙের ছিল বলে জানান তিনি।
এবারত আরও জানান, নিপার স্বামী প্রবাসী। মমতাজের সব ধরনের দেখাশোনা নিপা নিজেই করতেন এবং মমতাজের ব্যক্তিগত সহকারী জুয়েল টাকার জোগান দিতেন। মমতাজের আত্মগোপনের বিষয়ে জানতে বুধবার তার তৃতীয় স্বামী ডা. মঈন হাসান চঞ্চলের মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করা হলে, তিনি প্রতিবেদককে ফিরতি বার্তায় বিস্তারিত জানান।
তিনি আরও জানান, মমতাজ কিছুদিন তার দ্বিতীয় স্বামী মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রমজান আলীর মেয়ে রুনুর মোহাম্মদপুরের বাসায় আশ্রয়ে ছিলেন। এরপর তিনি নিপার ভাড়া করা বাসায় থাকতে শুরু করেন। তবে রমজানের ঘনিষ্ঠ স্বজন সানোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি এই তথ্য মিথ্যা বলে দাবি করেন।