রাজশাহী প্রতিনিধি: 
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মন্তব্য করেছেন যে ফারাক্কা বাঁধের কারণে বরেন্দ্র অঞ্চল কারবালার মতো পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে ফারাক্কা লং মার্চের ৪৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় যোগদানের পূর্বে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “মওলানা ভাসানী ৯০ বছর বয়সে যে ফারাক্কা লং মার্চ করেছেন, আমরা সেই দাবি আদায় করব। সেই জন্য ভারতের সঙ্গে পুনরায় চুক্তি করছি। যদি আমরা ন্যায্য হিস্যা না পাই, তাহলে বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে নিয়ে যাব।”
ফরিদা আখতার আরও বলেন, “জীবন-জীবিকা, মাছ এবং জলজ প্রাণী সবকিছু ধ্বংস হয়েছে। প্রত্যক্ষভাবে ছয় কোটি মানুষ এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির অভাবে এই দেশে কারবালা তৈরি হয়েছে। আমরা এর ন্যায্য বিচার চাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে আমরা ভারতের উপর এর জন্য চাপ সৃষ্টি করব।”
এর আগে, রাজশাহী সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, গবাদি পশুর পাশাপাশি মানুষেরও কিছু স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন। গরু-ছাগলের ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত মানুষেরা যেন নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশের গরু প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, কোরবানির ঈদ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের মিটিং হয়েছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাইরের পণ্য ভেতরে আনার চেষ্টা করবে, যা বন্ধ করা দরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিজিবি ও নৌপুলিশকে এ বিষয়ে কঠোর নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণকে দুঃখজনক উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, কৃষিতে যে হারে বিদ্যুৎ বিল নেওয়া হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে সেই হারে নেওয়া হয় না। এতে ছোট খামারিরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে।
ফারাক্কা লং মার্চের ৪৯ বছর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নাকিব, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহর আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
