বিদায়ী সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতন অব্যাহত ছিল। টানা কয়েক দিনের নিম্নমুখী প্রবণতার কারণে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধনে বড় ধরনের পতন হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন ০.৪৫ শতাংশ বা ২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা।
চলতি সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২১.২৬ পয়েন্ট বা ২.৪৭ শতাংশ কমেছে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৫০.২৪ পয়েন্ট বা ২.৭৬ শতাংশ এবং ডিএসইএস সূচক ৩৫.৩৯ পয়েন্ট বা ৩.২৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ২৯৯ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৪১৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এক সপ্তাহে লেনদেন কমেছে এক হাজার ১১৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে লেনদেন কমেছে ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৩২.৭৮ শতাংশ।
সপ্তাহের প্রতিটি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩২৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৫০টি কোম্পানির ও ফান্ডের, কমেছে ৩২২টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারের দর।
এদিকে, দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)-তেও একই চিত্র দেখা গেছে। সপ্তাহ ব্যবধানে সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ও সিএসসিএক্স যথাক্রমে ১.৬৫ শতাংশ এবং ১.৫১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩৪৭৭.১৬ পয়েন্ট ও ৮২৪০.২৪ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১.২৭ শতাংশ ও সিএসই-৩০ সূচক ১.৪৯ শতাংশ হ্রাস পেয়ে যথাক্রমে ১০৪৯.৬৪ পয়েন্ট এবং ১১৪৯৮.০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সিএসআই সূচকও ১.৬৫ শতাংশ কমে ৮৬৯.০২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
চলতি সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৫২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সপ্তাহ ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩০০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের, কমেছে ২০৩টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর।
গত কয়েক সপ্তাহে পুঁজিবাজারে টানা পতনের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা এখন বাজারের আগামী গতিবিধির দিকে তাকিয়ে আছেন। বিশ্লেষকরা বিনিয়োগকারীদের বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।