Hi

০৪:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে যাত্রী ছাউনি দখল করে দোকান নির্মাণ: ৩ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে যাত্রী ছাউনি দখল করে দোকান নির্মাণ ও ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সাগান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, সাধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন এবং মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন জেলা পরিষদের মালিকানাধীন যাত্রী ছাউনি দখল করে দোকান নির্মাণ করেছেন। পরে এসব দোকান আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল মন্ডল, আবু সাঈদ, মাহবুব হোসেন, আতিকুর রহমানের সহায়তায় ভাড়া দেওয়া হয়।


অভিযোগ ও স্থানীয়দের ভোগান্তি

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের শেষের দিকে নির্মিত ওই যাত্রী ছাউনিতে দোকান তৈরি করে প্রতিটি দোকান থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নেওয়া হয়েছে। এরপর মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে দোকানগুলো ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এখনও ওই জায়গাগুলো ব্যক্তিগতভাবে ভাড়া দিয়ে মাসিক আয় করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যাত্রীদের বসার জন্য নির্মিত স্থাপনাটি এখন আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না, এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। তারা আরও জানান, ১৯৮৬ সালে নির্মিত পুরোনো যাত্রী ছাউনিটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ার পর সংস্কার না করে সেখানে ব্যক্তিগত স্বার্থে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে।


ভাড়াটিয়া ও অভিযুক্তদের বক্তব্য

মার্কেটের বর্তমান ভাড়াটিয়া রাসেল হোসেন বলেন, “আমি তিন লাখ টাকা দিয়ে দোকানটি নাজির চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নিয়েছি। প্রতি মাসে ভাড়া দিচ্ছি দুই হাজার টাকা। পাশের চায়ের দোকানদার আড়াই লাখ টাকা দিয়েছেন। এই টাকাগুলো চেয়ারম্যান ও স্থানীয় নেতারা ভাগ করে নিয়েছেন।”

তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে সাধুহাটি ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন এবং মধুহাটি ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন একই বক্তব্য দিয়ে বলেন, “এক সময় সেখানে যাত্রী ছাউনি ছিল। পরে জেলা পরিষদের কাগজপত্রের ভিত্তিতেই দোকান নির্মাণ করা হয়েছে।” তারা বিস্তারিত জানতে জেলা পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। সাগান্না ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।


জেলা পরিষদের পদক্ষেপ

জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, “যাত্রী ছাউনিকে দোকানে রূপান্তরের অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ এবং অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

লেখক সম্পর্কে তথ্য

শৈলকুপায় বজ্রপাতে ১ কৃষকের মৃত্যু

ঝিনাইদহে যাত্রী ছাউনি দখল করে দোকান নির্মাণ: ৩ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ

আপডেট : ০৭:০৮:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে যাত্রী ছাউনি দখল করে দোকান নির্মাণ ও ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তিন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সাগান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, সাধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন এবং মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন জেলা পরিষদের মালিকানাধীন যাত্রী ছাউনি দখল করে দোকান নির্মাণ করেছেন। পরে এসব দোকান আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল মন্ডল, আবু সাঈদ, মাহবুব হোসেন, আতিকুর রহমানের সহায়তায় ভাড়া দেওয়া হয়।


অভিযোগ ও স্থানীয়দের ভোগান্তি

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের শেষের দিকে নির্মিত ওই যাত্রী ছাউনিতে দোকান তৈরি করে প্রতিটি দোকান থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নেওয়া হয়েছে। এরপর মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে দোকানগুলো ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এখনও ওই জায়গাগুলো ব্যক্তিগতভাবে ভাড়া দিয়ে মাসিক আয় করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যাত্রীদের বসার জন্য নির্মিত স্থাপনাটি এখন আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না, এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। তারা আরও জানান, ১৯৮৬ সালে নির্মিত পুরোনো যাত্রী ছাউনিটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ার পর সংস্কার না করে সেখানে ব্যক্তিগত স্বার্থে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে।


ভাড়াটিয়া ও অভিযুক্তদের বক্তব্য

মার্কেটের বর্তমান ভাড়াটিয়া রাসেল হোসেন বলেন, “আমি তিন লাখ টাকা দিয়ে দোকানটি নাজির চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নিয়েছি। প্রতি মাসে ভাড়া দিচ্ছি দুই হাজার টাকা। পাশের চায়ের দোকানদার আড়াই লাখ টাকা দিয়েছেন। এই টাকাগুলো চেয়ারম্যান ও স্থানীয় নেতারা ভাগ করে নিয়েছেন।”

তবে, অভিযোগ অস্বীকার করে সাধুহাটি ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন এবং মধুহাটি ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন একই বক্তব্য দিয়ে বলেন, “এক সময় সেখানে যাত্রী ছাউনি ছিল। পরে জেলা পরিষদের কাগজপত্রের ভিত্তিতেই দোকান নির্মাণ করা হয়েছে।” তারা বিস্তারিত জানতে জেলা পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। সাগান্না ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।


জেলা পরিষদের পদক্ষেপ

জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, “যাত্রী ছাউনিকে দোকানে রূপান্তরের অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ এবং অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।