Hi

১০:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষ নেতা খামেনির ক্ষমতা হস্তান্তর, ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয়!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ২১ জুন ২০২৫: ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু করে চালানো হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর, দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তার ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।1 এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খামেনি যুদ্ধকালীন নেতৃত্ব ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর ‘সুপ্রিম কাউন্সিল’-এর হাতে তুলে দিয়েছেন।2 ধারণা করা হচ্ছে, এটি ইরানের অভ্যন্তরে চলমান ‘জরুরি যুদ্ধ পরিস্থিতি’ মোকাবিলার অংশ। বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে খামেনির আকস্মিক মৃত্যু হলেও যেন কমান্ডের শূন্যতা তৈরি না হয়, সেজন্যই এটি একটি সতর্কতামূলক ক্ষমতা হস্তান্তর।


খামেনির অবস্থান ও ট্রাম্পের মন্তব্য

গত পাঁচ দিন ধরে খামেনি জনসমক্ষে অনুপস্থিত থাকায় তার অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। ইরান ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি বর্তমানে তেহরানের উত্তর-পূর্বে লাভিজানে একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন ছেলে মোজতবা খামেনি এবং পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা।

এদিকে, ইসরায়েল দাবি করেছে যে তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধানকে হত্যা করেছে, যা দেশটির সামরিক নেতৃত্বে বড় ধরনের ধাক্কা। অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এক পোস্টে বলেছেন, “আমরা জানি খামেনি কোথায় আছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু, কিন্তু আমরা এখন তাকে হত্যা করছি না।” ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা চাই না বেসামরিক মানুষ বা মার্কিন সৈন্যদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। তবে আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে।”


ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও ক্ষমতার ভারসাম্য

যদিও ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, তবে দেশটির বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, দেশ এখন এক বাস্তব জরুরি অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা বাড়ছে; ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ, জনসমাগম সীমিতকরণ ও নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

খামেনির এই সিদ্ধান্ত ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইরানের ক্ষমতার ভারসাম্য এখন একটি সামরিক নেতৃত্বনির্ভর মডেলে প্রবেশ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মোজতবা খামেনিকে উত্তরসূরি করার প্রস্তুতি অনেক দিন ধরেই চলছিল, তবে বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া একটি নতুন কৌশল হতে পারে।

ইসরায়েলি হামলার সরাসরি জবাবে ইরানও পাল্টা আঘাত করেছে। তবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার চাপে ইরানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের এই ‘ব্যাকফুটে’ যাওয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি বড় বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল, রয়টার্স

লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

মৌলভীবাজারে ‘জুলাই মঞ্চ’-এর জেলা কাঠামো প্রকাশ: আহ্বায়ক তানজিয়া শিশির, মুখপাত্র মো. তানিম হোসেন রুহিন

ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষ নেতা খামেনির ক্ষমতা হস্তান্তর, ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয়!

আপডেট : ০৫:২৫:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ২১ জুন ২০২৫: ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু করে চালানো হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর, দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি তার ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন।1 এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খামেনি যুদ্ধকালীন নেতৃত্ব ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর ‘সুপ্রিম কাউন্সিল’-এর হাতে তুলে দিয়েছেন।2 ধারণা করা হচ্ছে, এটি ইরানের অভ্যন্তরে চলমান ‘জরুরি যুদ্ধ পরিস্থিতি’ মোকাবিলার অংশ। বিশ্লেষকদের মতে, ভবিষ্যতে খামেনির আকস্মিক মৃত্যু হলেও যেন কমান্ডের শূন্যতা তৈরি না হয়, সেজন্যই এটি একটি সতর্কতামূলক ক্ষমতা হস্তান্তর।


খামেনির অবস্থান ও ট্রাম্পের মন্তব্য

গত পাঁচ দিন ধরে খামেনি জনসমক্ষে অনুপস্থিত থাকায় তার অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। ইরান ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি বর্তমানে তেহরানের উত্তর-পূর্বে লাভিজানে একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন ছেলে মোজতবা খামেনি এবং পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা।

এদিকে, ইসরায়েল দাবি করেছে যে তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধানকে হত্যা করেছে, যা দেশটির সামরিক নেতৃত্বে বড় ধরনের ধাক্কা। অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এক পোস্টে বলেছেন, “আমরা জানি খামেনি কোথায় আছেন। তিনি একটি সহজ লক্ষ্যবস্তু, কিন্তু আমরা এখন তাকে হত্যা করছি না।” ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা চাই না বেসামরিক মানুষ বা মার্কিন সৈন্যদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। তবে আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে।”


ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও ক্ষমতার ভারসাম্য

যদিও ইরান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, তবে দেশটির বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, দেশ এখন এক বাস্তব জরুরি অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতা বাড়ছে; ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ, জনসমাগম সীমিতকরণ ও নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

খামেনির এই সিদ্ধান্ত ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইরানের ক্ষমতার ভারসাম্য এখন একটি সামরিক নেতৃত্বনির্ভর মডেলে প্রবেশ করছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মোজতবা খামেনিকে উত্তরসূরি করার প্রস্তুতি অনেক দিন ধরেই চলছিল, তবে বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া একটি নতুন কৌশল হতে পারে।

ইসরায়েলি হামলার সরাসরি জবাবে ইরানও পাল্টা আঘাত করেছে। তবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার চাপে ইরানের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের এই ‘ব্যাকফুটে’ যাওয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি বড় বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল, রয়টার্স