ঢাকা, ১২ জুলাই ২০২৫: রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লালচাঁদ সোহাগকে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে পাথর মেরে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে যখন নিন্দার ঝড় বইছে, তখন স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল! শনিবার সকালে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে!

ড. আসিফ নজরুল তার পোস্টে লেখেন, “রাজধানীর মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে এরইমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন-২০০২ এর ধারা ১০ এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।”

৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিটফোর্ড হাসপাতালের তিন নম্বর গেটসংলগ্ন রজনী ঘোষ লেনে সোহাগকে কুপিয়ে এবং মাথায় বড় পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। অনেকেই মন্তব্য করেন, এমন নৃশংসতা তারা আগে দেখেননি, কেউ কেউ একে ‘প্রস্তর যুগ’ বলেও আখ্যা দেন।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ঘটনার সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা এবং আনসার ক্যাম্প অদূরেই থাকলেও, সোহাগের ওপর এমন বর্বরতা চলাকালীন কেউই সাহস করে এগিয়ে আসতে পারেননি। পরবর্তীতে তার নিথর দেহ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় নিহত সোহাগের বোন মঞ্জু আরা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায় মাহমুদুল হাসান মহিন, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির (ছোট মনির), আলমগীর, লম্বা মনির, নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাকিব, সাবা করিম লাকি, কালু (স্বেচ্ছাসেবক কালু), রজব আলী পিন্টু, মো. সিরাজুল ইসলাম, তারেক রহমান রবিন, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী, আনিসুর রহমান হাওলাদারসহ আরও অজ্ঞাত ১৫–২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে, কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার জানিয়েছেন, সিসিটিভি ফুটেজে থাকা সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। মূলহোতা মহিন এবং তারেক রহমান রবিনকে এরইমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জোরদার অভিযান চলছে।

ড. আসিফ নজরুলের এই ঘোষণা কি মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত নিশ্চিত করবে? বর্বরতার এই যুগে ন্যায়বিচার কি সত্যিই আলোর মুখ দেখবে? পুরো দেশ এখন এই বিচারের দিকে তাকিয়ে!

ট্যাগস: #মিটফোর্ডহত্যা #লালচাঁদসোহাগ #আসিফনজরুল #দ্রুতবিচার #মৃত্যুদণ্ড #অপরাধ #দৃষ্টান্তমূলকশাস্তি #ব্রেকিংনিউজ #বাংলাদেশেরআইনশৃঙ্খলা #সামাজিকমাধ্যমেতোলপাড়