সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেছেন যে, সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল এবং তাঁদের সম্মানহানি করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে অতীতে সম্মানিত হয়েছেন, বর্তমানেও হচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও তাঁদের প্রতি এই শ্রদ্ধা বজায় থাকবে।
সোমবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশব্যাপী সেনাবাহিনীর কার্যক্রম
সারাদেশে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম তুলে ধরতে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের বাড়িতে যখন ‘মব’ হামলা হয়েছিল, তখন সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি নিশ্চিত করেন যে সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও উন্নতি হবে।
কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মব’ বা জনতার ভিড়ের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে। যেখানেই এমন ঘটনা ঘটেছে, সেখানেই সেনাবাহিনী দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে তথ্য পেতে বিলম্ব হওয়ায় সেনাবাহিনী পৌঁছাতে দেরি হয়েছে, তবে এমন কোনো উদাহরণ নেই যে সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছে আর তারা যায়নি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও গ্রেপ্তার
যারা ‘মব’ সৃষ্টি করে আইন হাতে তুলে নিচ্ছে, তাদের বিষয়ে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর কাজ নয়। সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারের মাধ্যমে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করে হস্তান্তর করতে পারে, কিন্তু সাজা দিতে পারে না। তিনি বলেন, সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে এবং তারা ইতিমধ্যেই একসঙ্গে কাজ শুরু করেছে।
রাজবাড়ীর ঘটনা
রাজবাড়ীতে নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলার’ মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া এবং দরবারে হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, এই ঘটনা সম্পর্কে সেনাবাহিনী অনেক পরে জানতে পারে। তবে খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং রাত ১১টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তৎপর।
জাতীয় নির্বাচন
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পায়নি। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সে অনুযায়ী সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, গত এক মাসে সেনাবাহিনী ৬৫টি অবৈধ অস্ত্র ও ২৯৭ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এছাড়াও, খোয়া যাওয়া ৯,৭৯৪টি অস্ত্র এবং ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫৯ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে এ পর্যন্ত ১৭,৯২৬ জনকে এবং গত এক মাসে ১,২৯৪ জনকে সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করেছে।