Hi

০৪:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেভাবে তৈরি করবেন কোরআনের প্রতি ভালোবাসা হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট : ০৯:৫৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
  • ৫৮১ জন দেখেছে

আল-কোরআন, পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ও নির্ভুল গ্রন্থ। এই মহাগ্রন্থ মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত এক পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। কোরআন পাঠ, চিন্তা, অনুধাবন ও আমল—সবই ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। অথচ অনেক মুসলমানের জীবনেই কোরআনের প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা অনুপস্থিত।

আসুন জেনে নিই—কীভাবে আমরা নিজেদের ও নতুন প্রজন্মের হৃদয়ে কোরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা তৈরি করতে পারি।

১. ছোটবেলা থেকেই কোরআন শেখানো

একজন শিশুর মনে কোনো কিছু গেঁথে দেওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় তার ছোটবেলা। তাই শিশুকে ছোট ছোট সুরা মুখস্থ করানো, শুদ্ধ উচ্চারণে তিলাওয়াত শেখানো এবং কিছুটা বড় হওয়ার পর অর্থ ও বার্তা বোঝাতে সাহায্য করলে তার মধ্যে কোরআনের প্রতি এক আত্মিক টান সৃষ্টি হবে।

২. রাতে কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব দেওয়া

রাতের নিঃস্তব্ধতা ও প্রশান্ত পরিবেশ কোরআন অনুধাবনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। হাদিসে এসেছে, যারা রাতে কোরআন তিলাওয়াত করে, তাদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়। গভীর রাতে নিয়মিত কোরআন পাঠ অভ্যাসে পরিণত হলে কোরআনের প্রতি ভালোবাসা ধীরে ধীরে অটুট হবে।

৩. আল্লাহর কাছে দোয়া করা

যে কোনো ভালো কাজের জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া জরুরি। কোরআনের প্রতি ভালোবাসা চাওয়ার জন্য নিয়মিত দোয়া করা উচিত—যেন এই মহাগ্রন্থ আমাদের অন্তরে জায়গা করে নেয় এবং আমাদের জীবনের আলো হয়।

৪. শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচা

শয়তান সব সময় মানুষকে কোরআন থেকে দূরে রাখতে চায়। সে কারণে কোরআন পাঠের পূর্বে আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া জরুরি। কোরআনে বলা হয়েছে:
“যখন তুমি কোরআন পাঠ করবে, তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো।” (সুরা নাহল: ৯৮)

৫. গুনাহ থেকে বিরত থাকা

গুনাহ অন্তরকে কলুষিত করে তোলে, যার ফলে কোরআনের আলো সেখানে প্রবেশ করতে পারে না। পাপমুক্ত জীবন কোরআনের ভালোবাসা অর্জনের বড় মাধ্যম। আল্লাহ কোরআনকে “রুহ” এবং “নুর” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, যা আলোকিত করে অন্তরকে।

৬. কোরআনের মর্যাদা ও ফজিলত জানা

কোরআনের গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে যেসব আয়াত ও হাদিস আছে সেগুলোর অধ্যয়ন হৃদয়ে কোরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে। যারা কোরআনকে জীবনের মূল হিসেবে গ্রহণ করেছে, তাদের জীবন কাহিনি জানা অনুপ্রেরণা জোগায়।

উপসংহার

যে ব্যক্তি কোরআনকে সামনে রাখে, কিয়ামতের দিন কোরআন তাকে জান্নাতের পথ দেখাবে। আর যে ব্যক্তি কোরআনকে উপেক্ষা করে, সে হবে ধ্বংসপ্রাপ্ত। তাই আসুন, কোরআনকে ভালোবাসি, কোরআনের আলোয় জীবন গড়ি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কোরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা অর্জনের তাওফিক দিন। আমিন।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

শৈলকুপায় বজ্রপাতে ১ কৃষকের মৃত্যু

যেভাবে তৈরি করবেন কোরআনের প্রতি ভালোবাসা হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী

আপডেট : ০৯:৫৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

আল-কোরআন, পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ও নির্ভুল গ্রন্থ। এই মহাগ্রন্থ মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত এক পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। কোরআন পাঠ, চিন্তা, অনুধাবন ও আমল—সবই ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। অথচ অনেক মুসলমানের জীবনেই কোরআনের প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা অনুপস্থিত।

আসুন জেনে নিই—কীভাবে আমরা নিজেদের ও নতুন প্রজন্মের হৃদয়ে কোরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা তৈরি করতে পারি।

১. ছোটবেলা থেকেই কোরআন শেখানো

একজন শিশুর মনে কোনো কিছু গেঁথে দেওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় তার ছোটবেলা। তাই শিশুকে ছোট ছোট সুরা মুখস্থ করানো, শুদ্ধ উচ্চারণে তিলাওয়াত শেখানো এবং কিছুটা বড় হওয়ার পর অর্থ ও বার্তা বোঝাতে সাহায্য করলে তার মধ্যে কোরআনের প্রতি এক আত্মিক টান সৃষ্টি হবে।

২. রাতে কোরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব দেওয়া

রাতের নিঃস্তব্ধতা ও প্রশান্ত পরিবেশ কোরআন অনুধাবনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। হাদিসে এসেছে, যারা রাতে কোরআন তিলাওয়াত করে, তাদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয়। গভীর রাতে নিয়মিত কোরআন পাঠ অভ্যাসে পরিণত হলে কোরআনের প্রতি ভালোবাসা ধীরে ধীরে অটুট হবে।

৩. আল্লাহর কাছে দোয়া করা

যে কোনো ভালো কাজের জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া জরুরি। কোরআনের প্রতি ভালোবাসা চাওয়ার জন্য নিয়মিত দোয়া করা উচিত—যেন এই মহাগ্রন্থ আমাদের অন্তরে জায়গা করে নেয় এবং আমাদের জীবনের আলো হয়।

৪. শয়তানের প্ররোচনা থেকে বাঁচা

শয়তান সব সময় মানুষকে কোরআন থেকে দূরে রাখতে চায়। সে কারণে কোরআন পাঠের পূর্বে আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া জরুরি। কোরআনে বলা হয়েছে:
“যখন তুমি কোরআন পাঠ করবে, তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করো।” (সুরা নাহল: ৯৮)

৫. গুনাহ থেকে বিরত থাকা

গুনাহ অন্তরকে কলুষিত করে তোলে, যার ফলে কোরআনের আলো সেখানে প্রবেশ করতে পারে না। পাপমুক্ত জীবন কোরআনের ভালোবাসা অর্জনের বড় মাধ্যম। আল্লাহ কোরআনকে “রুহ” এবং “নুর” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, যা আলোকিত করে অন্তরকে।

৬. কোরআনের মর্যাদা ও ফজিলত জানা

কোরআনের গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে যেসব আয়াত ও হাদিস আছে সেগুলোর অধ্যয়ন হৃদয়ে কোরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করে। যারা কোরআনকে জীবনের মূল হিসেবে গ্রহণ করেছে, তাদের জীবন কাহিনি জানা অনুপ্রেরণা জোগায়।

উপসংহার

যে ব্যক্তি কোরআনকে সামনে রাখে, কিয়ামতের দিন কোরআন তাকে জান্নাতের পথ দেখাবে। আর যে ব্যক্তি কোরআনকে উপেক্ষা করে, সে হবে ধ্বংসপ্রাপ্ত। তাই আসুন, কোরআনকে ভালোবাসি, কোরআনের আলোয় জীবন গড়ি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কোরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা অর্জনের তাওফিক দিন। আমিন।