Hi

০৮:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ২০০ বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট, ১৫০০ পরিবার ঘরছাড়া 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ২নং জামাল ইউনিয়নের সম্প্রতি দু’পক্ষের সহিংসতার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা বিএনপি। বুধবার সকাল ১১ টায় শহরের নলডাঙ্গা সড়কে বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সহিংসতার ঘটনায় ইউনিয়নটির ২০টি গ্রামের প্রায় ১৫০০ পরিবার ঘরছাড়া ও প্রায় ২ শতাধিক বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইলিয়াস রহমান মিঠু। এ সময় উপস্থিত আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম সাইদুল, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, মোশাররফ হোসেন, জবেদ আলী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ অন্যান্যরা।

লিখিত বক্তব্যে ইলিয়াস রহমান মিঠু বলেন, গত ৩০ ও ৩১ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা ব্যাপী দুইদিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে উপজেলা ও পৌর বিএনপি। ২নং জামাল ইউনিয়নও কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। কিন্তু জামাল ইউনিয়নে যেন বিএনপি কোন কর্মসূচি গ্রহন করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা ও ৪ আগস্ট বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ মামলার আসামি আলাউদ্দিন আলা এবং সাবেক জামায়াত নেতা ইউনুস আলীর নেতৃত্বে জামাল ইউনিয়নে ঢাল-সড়কি, রামদা নিয়ে মোটরসাইকেলে মহড়া দিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে।

তিনি বলেন, ৩১মে রাতে উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামে দফায় দফায় নজরুল ইসলাম মোল্লা, আলা চেয়ারম্যান ও ইউনুছ আলী মিটিং করতে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করার জন্য। সংঘর্ষ আর লুটপাটের বিষয়টি উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ থানার ওসিকে জানালেও তিনি আমলে নেননি। রাত থেকে শুরু করে সংঘর্ষের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত দফায় দফায় প্রশাসনের স্মরণাপন্ন হওয়া সত্ত্বেও কোন সহযোগিতা পাইনি। সহযোগিতা পেলে ও পুলিশ মোতায়েন করলে এই সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হতো।

উপজেলা বিএনপির এই যুগ্ম আহবায়ক আরো বলেন, ১জুন সকাল ৮ টার দিকে হঠাৎ করে ২/৩শ’ মানুষ দলবদ্ধ হয়ে রামদা, বোমা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নজরুল মোল্লা, আলাউদ্দিন আলা ও ইউনুছ আলীর নেতৃত্বে নাকোবাড়িয়া গ্রাম থেকে পারখালকুলা গ্রামে ঢুকে বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করে। তখন এলাকাবাসী তাদের প্রতিহত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয় এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলে। দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের হয়ে জামাল ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করেছে নজরুল ইসলাম মোল্লা ও আলাউদ্দিন আলা।

তিনি বলেন, এই সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামাল ও কোলা ইউনিয়নের ২ শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে, ঘরছাড়া রয়েছে প্রায় ১৫০০ পরিবার। ইতিমধ্যে ঘরছাড়া পরিবারগুলো আবাদের জন্য মাঠেও যেতে পারছে না। এই সংঘর্ষকে পুঁজি করে বিএনপির ত্যাগী নেতা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। যে ঘটনার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু থানার ওসি মামলা গ্রহণ করতে গড়িমসি করে কোন কিছুর তোয়াক্কা বা তদন্ত না করেই তাকে আসামি করেই মামলা গ্রহণ করেছে। অবিলম্বে নুরুল ইসলামের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মুল হোতা নজরুল ইসলাম মোল্লা ও আলাউদ্দিন আল আজাদকে দ্রুত গ্রেফতার না করা হলে এই ওসির প্রত্যাহারের জন্য লাগাতার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, সংঘর্ষের ঘটনা আগে থেকে কোনকিছুই আমি জানিনা। জানামাত্রই আমিসহ ফোর্স নিয়ে সকল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যায়।

প্রসঙ্গত, গত ১ জুন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া এলাকায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র দু’পক্ষের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়। এরপর থেকেই জামাল ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

ফ্রিডম ফ্লোটিলার সব নৌযান একসঙ্গে গাজার পথে এগোচ্ছে: শহিদুল আলম

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে ২০০ বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট, ১৫০০ পরিবার ঘরছাড়া 

আপডেট : ০৯:৫০:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ২নং জামাল ইউনিয়নের সম্প্রতি দু’পক্ষের সহিংসতার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা বিএনপি। বুধবার সকাল ১১ টায় শহরের নলডাঙ্গা সড়কে বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সহিংসতার ঘটনায় ইউনিয়নটির ২০টি গ্রামের প্রায় ১৫০০ পরিবার ঘরছাড়া ও প্রায় ২ শতাধিক বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইলিয়াস রহমান মিঠু। এ সময় উপস্থিত আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম সাইদুল, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন, মোশাররফ হোসেন, জবেদ আলী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ অন্যান্যরা।

লিখিত বক্তব্যে ইলিয়াস রহমান মিঠু বলেন, গত ৩০ ও ৩১ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা ব্যাপী দুইদিনের কর্মসূচি গ্রহণ করে উপজেলা ও পৌর বিএনপি। ২নং জামাল ইউনিয়নও কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। কিন্তু জামাল ইউনিয়নে যেন বিএনপি কোন কর্মসূচি গ্রহন করতে না পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা ও ৪ আগস্ট বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ মামলার আসামি আলাউদ্দিন আলা এবং সাবেক জামায়াত নেতা ইউনুস আলীর নেতৃত্বে জামাল ইউনিয়নে ঢাল-সড়কি, রামদা নিয়ে মোটরসাইকেলে মহড়া দিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে।

তিনি বলেন, ৩১মে রাতে উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামে দফায় দফায় নজরুল ইসলাম মোল্লা, আলা চেয়ারম্যান ও ইউনুছ আলী মিটিং করতে থাকে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ করার জন্য। সংঘর্ষ আর লুটপাটের বিষয়টি উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ থানার ওসিকে জানালেও তিনি আমলে নেননি। রাত থেকে শুরু করে সংঘর্ষের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত দফায় দফায় প্রশাসনের স্মরণাপন্ন হওয়া সত্ত্বেও কোন সহযোগিতা পাইনি। সহযোগিতা পেলে ও পুলিশ মোতায়েন করলে এই সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হতো।

উপজেলা বিএনপির এই যুগ্ম আহবায়ক আরো বলেন, ১জুন সকাল ৮ টার দিকে হঠাৎ করে ২/৩শ’ মানুষ দলবদ্ধ হয়ে রামদা, বোমা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নজরুল মোল্লা, আলাউদ্দিন আলা ও ইউনুছ আলীর নেতৃত্বে নাকোবাড়িয়া গ্রাম থেকে পারখালকুলা গ্রামে ঢুকে বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করে। তখন এলাকাবাসী তাদের প্রতিহত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয় এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলে। দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের হয়ে জামাল ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করেছে নজরুল ইসলাম মোল্লা ও আলাউদ্দিন আলা।

তিনি বলেন, এই সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামাল ও কোলা ইউনিয়নের ২ শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে, ঘরছাড়া রয়েছে প্রায় ১৫০০ পরিবার। ইতিমধ্যে ঘরছাড়া পরিবারগুলো আবাদের জন্য মাঠেও যেতে পারছে না। এই সংঘর্ষকে পুঁজি করে বিএনপির ত্যাগী নেতা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। যে ঘটনার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু থানার ওসি মামলা গ্রহণ করতে গড়িমসি করে কোন কিছুর তোয়াক্কা বা তদন্ত না করেই তাকে আসামি করেই মামলা গ্রহণ করেছে। অবিলম্বে নুরুল ইসলামের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মুল হোতা নজরুল ইসলাম মোল্লা ও আলাউদ্দিন আল আজাদকে দ্রুত গ্রেফতার না করা হলে এই ওসির প্রত্যাহারের জন্য লাগাতার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, সংঘর্ষের ঘটনা আগে থেকে কোনকিছুই আমি জানিনা। জানামাত্রই আমিসহ ফোর্স নিয়ে সকল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যায়।

প্রসঙ্গত, গত ১ জুন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া এলাকায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র দু’পক্ষের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়। এরপর থেকেই জামাল ইউনিয়নের ২০টি গ্রামে বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।