Hi

০৮:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিয়ের সাত দিনের মাথায় স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিয়ের মাত্র সাত দিনের মাথায় স্ত্রী জান্নাত আক্তারের (১৭) হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন স্বামী মেহেদী হাসান (২৭)। শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত মেহেদী হাসান মৃত জলফু মিয়ার ছেলে এবং পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।

এই ঘটনায় পুলিশ স্ত্রী জান্নাত আক্তারকে আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাত তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। মেহেদী হাসানের পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় হলেও, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে তার মাকে নিয়ে মসজিদপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মে পারিবারিকভাবে মেহেদী হাসানের সাথে মসজিদ পাড়ার আল আমিনের মেয়ে জান্নাত আক্তারের বিয়ে হয়। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মেহেদী রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোররাতে নিহতের স্ত্রী বাড়ির মালিককে ডেকে বলেন তার স্বামী অসুস্থ। বাড়ির মালিক ও স্থানীয় লোকজন গিয়ে দেখেন মেহেদী ঘরের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, জান্নাত আক্তারের বিয়ের আগে থেকেই অন্য এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং বিয়ের পরও সেই সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। সে তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিলেন না। নিহতের পরিবার অভিযোগ করছে, প্রেমের সম্পর্কের কারণেই জান্নাত তার স্বামীকে হত্যা করেছে।

নিহত মেহেদী হাসানের মা বকুল বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আট দিন হইছে আমার ছেলেরে বিয়ে করাইছে। বউয়ের অন্য ছেলের সাথে প্রেম ছিল। সে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। সরকারের কাছে ফাঁসি চাই।”

নিহতের বড় ভাই আবুল কালাম বলেন, “আমার ছোট ভাই একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করত। সে খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। তার স্ত্রী ৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। শুনেছি তার অন্য ছেলের সাথে প্রেম আছে।”

এ বিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাত আক্তার তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আমরা আরও জানতে পেরেছি, বিয়ের আগে এক ছেলের সঙ্গে জান্নাতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং বিয়ের পর থেকে সে তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিল না। গত রাতে সে তার স্বামীকে বলে যে তার ঘুম আসছে না এবং তাকে দিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট আনায়। পরে কোকের সঙ্গে ৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে হত্যা করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।”

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

ফ্রিডম ফ্লোটিলার সব নৌযান একসঙ্গে গাজার পথে এগোচ্ছে: শহিদুল আলম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিয়ের সাত দিনের মাথায় স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন

আপডেট : ০৭:১৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিয়ের মাত্র সাত দিনের মাথায় স্ত্রী জান্নাত আক্তারের (১৭) হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন স্বামী মেহেদী হাসান (২৭)। শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত মেহেদী হাসান মৃত জলফু মিয়ার ছেলে এবং পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন।

এই ঘটনায় পুলিশ স্ত্রী জান্নাত আক্তারকে আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাত তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। মেহেদী হাসানের পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় হলেও, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে তার মাকে নিয়ে মসজিদপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মে পারিবারিকভাবে মেহেদী হাসানের সাথে মসজিদ পাড়ার আল আমিনের মেয়ে জান্নাত আক্তারের বিয়ে হয়। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মেহেদী রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোররাতে নিহতের স্ত্রী বাড়ির মালিককে ডেকে বলেন তার স্বামী অসুস্থ। বাড়ির মালিক ও স্থানীয় লোকজন গিয়ে দেখেন মেহেদী ঘরের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তাকে উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, জান্নাত আক্তারের বিয়ের আগে থেকেই অন্য এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং বিয়ের পরও সেই সম্পর্ক অব্যাহত ছিল। সে তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিলেন না। নিহতের পরিবার অভিযোগ করছে, প্রেমের সম্পর্কের কারণেই জান্নাত তার স্বামীকে হত্যা করেছে।

নিহত মেহেদী হাসানের মা বকুল বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আট দিন হইছে আমার ছেলেরে বিয়ে করাইছে। বউয়ের অন্য ছেলের সাথে প্রেম ছিল। সে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। সরকারের কাছে ফাঁসি চাই।”

নিহতের বড় ভাই আবুল কালাম বলেন, “আমার ছোট ভাই একটি ওষুধের দোকানে চাকরি করত। সে খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। তার স্ত্রী ৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। শুনেছি তার অন্য ছেলের সাথে প্রেম আছে।”

এ বিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাত আক্তার তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। আমরা আরও জানতে পেরেছি, বিয়ের আগে এক ছেলের সঙ্গে জান্নাতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং বিয়ের পর থেকে সে তার স্বামীকে মেনে নিতে পারছিল না। গত রাতে সে তার স্বামীকে বলে যে তার ঘুম আসছে না এবং তাকে দিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট আনায়। পরে কোকের সঙ্গে ৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে হত্যা করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।”