ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অঞ্জলি লহ মোর’ নামের একটি ভাস্কর্য সংস্কারের নামে ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ও দাবি
বুধবার (১৮ জুন) ভাস্কর্যটির পাশেই শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে। তাদের হাতে থাকা রঙিন কাগজে লেখা ছিল, ‘শিল্পের উপর আঘাত বন্ধ করতে হবে’, ‘সংস্কৃতির উপর আঘাত বন্ধ করতে হবে’, এবং ‘মূলডিজাইন অনুযায়ী ভাস্কর্যটি মডিফাই করতে হবে’।
ফোকলোর বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, “এই ভাস্কর্য ভাঙ্গার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্পষ্টত দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। ভাস্কর্যের মধ্যে শিল্প-সংস্কৃতির গুণ থাকে। ভাস্কর্য ভাঙার কারণে এই শিল্প-সংস্কৃতিকে আঘাত করা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই ভাস্কর্যতে যদি আর একটি আঘাত করা হয়, ভাস্কর্যটি যদি পুনঃনির্মাণ না করা হয়, তাহলে আমরা সকলকে নিয়ে এই প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।” তিনি আরও যোগ করেন যে জুলাই বিপ্লবের পর শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসন তা না করে স্বৈরাচারী মনোভাব দেখিয়েছে, যার বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য
ভাস্কর্য ভাঙার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী জানান, ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি যতটুকু ভাঙা হয়েছে ততটুকুই থাকবে এবং এর বেশি আর ভাঙা হবে না। তিনি আরও জানান, আগামী ২২ তারিখ একটি মিটিং আছে এবং সেই মিটিংয়ে ভাস্কর্যটি পুনঃনির্মাণ বা সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ভাস্কর্য পরিচিতি
উল্লেখ্য, ভাস্কর্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ভবন এবং পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি পুকুরের অংশে স্থাপন করা হয়েছিল। এটি একজন নারী দু’হাত সংযুক্ত করে অঞ্জলি দিচ্ছেন এমন ভাবনা বহন করত। ভাস্কর্যটি দেশের খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পী, শিক্ষক, অভিনেত্রী মুনমুন আহমেদের হাতের ছবি থেকে তৈরি করা হয়েছিল এবং এর ভাস্কর ছিলেন মনিন্দ্রপাল।