Hi

০১:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টঙ্গীতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি, ৫ জন গ্রেপ্তার

টঙ্গীতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি, ৫ জন গ্রেপ্তার

গাজীপুর, ২০ জুন ২০২৪: গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগে পাঁচ দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারীকে অস্ত্রশস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিস্তারিত

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার সোনারামপুর এলাকার মো. শহীদ মিয়ার ছেলে মো. তপন মিয়া (৩২); মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার পাঁচ্চর এলাকার মো. সালামের ছেলে রাশেদুল ইসলাম রাসেল (২২); বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার জাবেদ আহম্মেদের ছেলে মো. রিফাত (১৯); কাজিরহাট থানার মাধবরায় এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. নকিব (১৯); এবং নরসিংদী সদর থানার রাঙ্গামাটিয়া এলাকার মৃত নাছির উদ্দিনের ছেলে মো. নাদিম (২৯)। তারা বর্তমানে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে নিয়মিত ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অপহরণ ও উদ্ধার অভিযান

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, টঙ্গী পূর্ব থানার হিমারদিঘী এলাকার হকের মোড়ের পাশে দিদারের রিকশার গ্যারেজের ভেতরে সুমন মিয়া (৪৭) নামের এক ব্যক্তিকে জোরপূর্বক আটক রাখা হয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে জিএমপি’র অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের দিক-নির্দেশনায় টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে অপহৃত সুমন মিয়াকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে: তপনের ডান হাতে থাকা লাল কসটেপ দ্বারা মোড়ানো একটি অবিস্ফোরিত ককটেল এবং তার কোমরে গোঁজা ১৭ ইঞ্চি লম্বা একটি স্টিলের ছোরা; নাদিমের ডান হাতে থাকা লাল কসটেপ দ্বারা মোড়ানো একটি অবিস্ফোরিত ককটেল এবং তার কোমরে খবরের কাগজ দ্বারা মোড়ানো গোঁজা ৯ ইঞ্চি লম্বা একটি লোহার তৈরি চাকু; রাশেদুল ইসলামের ডান হাতে থাকা ৩১ ইঞ্চি লম্বা একটি স্টিলের তৈরি তলোয়ার; নকিবের ডান হাতে থাকা একটি অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করার স্টিলের পাত এবং তার প্যান্টের ডান পকেটে একটি লোহার তৈরি বাটাল; রিফাতের ডান হাতে থাকা ২৭ ইঞ্চি লম্বা একটি লোহার তৈরি রামদা; এবং পার্শ্ববর্তী রুমের বিছানার নিচ থেকে একটি চাকু, নাট খোলার যন্ত্র ও তিনটি হাতুড়ি।

চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ

পুলিশ জানায়, অপহৃত সুমন মিয়া ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার বান্দার ঘাটা এলাকার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে। তিনি টঙ্গী পশ্চিম থানার খাঁপাড়া পুরান বাজার এলাকায় বসবাস করেন এবং পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাযোগে কেমিক্যাল কিনতে টঙ্গীর নতুন বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথিমধ্যে হিমারদীঘি মা টাওয়ারের সামনে পৌঁছালে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন কৌশলে তার অটোরিকশাটি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে তাকে অপহরণ করে। এরপর তাকে এক লাখ টাকা চাঁদার জন্য মারধর করে গুরুতর জখম করে। আসামিরা আরও টাকা পাওয়ার জন্য তার মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের লোকজনের মোবাইলে ফোন করে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তাকে মারধর করতে থাকে।

মামলা ও পরবর্তী পদক্ষেপ

আসামিদের নিজ নিজ হেফাজতে অবিস্ফোরিত ককটেল, অস্ত্রশস্ত্র এবং অস্ত্রশস্ত্র তৈরির যন্ত্রপাতি রাখা এবং একই উদ্দেশ্যে সুমন মিয়াকে অপহরণ করে আটক রেখে চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায় এবং মারপিট করে জখম করার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড-১৮৬০ এর ৩৬৫/৩৪২/৩৮৫/৩৮৬/৩২৩/৩৪ ধারা এবং ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এফ) তৎসহ ১৯০৮ সনের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও চুরি, ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

ধর্মের চাদর নাকি রাজনৈতিক চাল? আলম বিশ্বাসের দলবল ঘিরে জল্পনা

টঙ্গীতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি, ৫ জন গ্রেপ্তার

আপডেট : ০৩:১৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

টঙ্গীতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি, ৫ জন গ্রেপ্তার

গাজীপুর, ২০ জুন ২০২৪: গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে চাঁদা দাবি ও মারধরের অভিযোগে পাঁচ দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারীকে অস্ত্রশস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিস্তারিত

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানার সোনারামপুর এলাকার মো. শহীদ মিয়ার ছেলে মো. তপন মিয়া (৩২); মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার পাঁচ্চর এলাকার মো. সালামের ছেলে রাশেদুল ইসলাম রাসেল (২২); বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার জাবেদ আহম্মেদের ছেলে মো. রিফাত (১৯); কাজিরহাট থানার মাধবরায় এলাকার মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. নকিব (১৯); এবং নরসিংদী সদর থানার রাঙ্গামাটিয়া এলাকার মৃত নাছির উদ্দিনের ছেলে মো. নাদিম (২৯)। তারা বর্তমানে টঙ্গীর বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে নিয়মিত ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অপহরণ ও উদ্ধার অভিযান

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, টঙ্গী পূর্ব থানার হিমারদিঘী এলাকার হকের মোড়ের পাশে দিদারের রিকশার গ্যারেজের ভেতরে সুমন মিয়া (৪৭) নামের এক ব্যক্তিকে জোরপূর্বক আটক রাখা হয়েছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে জিএমপি’র অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের দিক-নির্দেশনায় টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে অপহৃত সুমন মিয়াকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে: তপনের ডান হাতে থাকা লাল কসটেপ দ্বারা মোড়ানো একটি অবিস্ফোরিত ককটেল এবং তার কোমরে গোঁজা ১৭ ইঞ্চি লম্বা একটি স্টিলের ছোরা; নাদিমের ডান হাতে থাকা লাল কসটেপ দ্বারা মোড়ানো একটি অবিস্ফোরিত ককটেল এবং তার কোমরে খবরের কাগজ দ্বারা মোড়ানো গোঁজা ৯ ইঞ্চি লম্বা একটি লোহার তৈরি চাকু; রাশেদুল ইসলামের ডান হাতে থাকা ৩১ ইঞ্চি লম্বা একটি স্টিলের তৈরি তলোয়ার; নকিবের ডান হাতে থাকা একটি অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করার স্টিলের পাত এবং তার প্যান্টের ডান পকেটে একটি লোহার তৈরি বাটাল; রিফাতের ডান হাতে থাকা ২৭ ইঞ্চি লম্বা একটি লোহার তৈরি রামদা; এবং পার্শ্ববর্তী রুমের বিছানার নিচ থেকে একটি চাকু, নাট খোলার যন্ত্র ও তিনটি হাতুড়ি।

চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ

পুলিশ জানায়, অপহৃত সুমন মিয়া ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার বান্দার ঘাটা এলাকার মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে। তিনি টঙ্গী পশ্চিম থানার খাঁপাড়া পুরান বাজার এলাকায় বসবাস করেন এবং পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাযোগে কেমিক্যাল কিনতে টঙ্গীর নতুন বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথিমধ্যে হিমারদীঘি মা টাওয়ারের সামনে পৌঁছালে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন কৌশলে তার অটোরিকশাটি ভাড়া নেওয়ার কথা বলে তাকে অপহরণ করে। এরপর তাকে এক লাখ টাকা চাঁদার জন্য মারধর করে গুরুতর জখম করে। আসামিরা আরও টাকা পাওয়ার জন্য তার মোবাইল ফোন থেকে তার পরিবারের লোকজনের মোবাইলে ফোন করে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তাকে মারধর করতে থাকে।

মামলা ও পরবর্তী পদক্ষেপ

আসামিদের নিজ নিজ হেফাজতে অবিস্ফোরিত ককটেল, অস্ত্রশস্ত্র এবং অস্ত্রশস্ত্র তৈরির যন্ত্রপাতি রাখা এবং একই উদ্দেশ্যে সুমন মিয়াকে অপহরণ করে আটক রেখে চাঁদা দাবি ও চাঁদা আদায় এবং মারপিট করে জখম করার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড-১৮৬০ এর ৩৬৫/৩৪২/৩৮৫/৩৮৬/৩২৩/৩৪ ধারা এবং ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এফ) তৎসহ ১৯০৮ সনের বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও চুরি, ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।