গাজীপুর, ২৮ জুন ২০২৫: গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় ৫৫ বছর বয়সী এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে মাদক সংক্রান্তে আটক করে ২৭ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি দক্ষিণের ইন্সপেক্টর নজরুল ও এসআই মোঃ জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ সঙ্গীয় ফোর্সের বিরুদ্ধে। গত বুধবার (২৫ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃত ব্যক্তি ও অভিযোগের বিবরণ
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— মহানগরীর গাছা থানার ৩৮ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ খাইলকৈর হিন্দু বাড়ির মোড় এলাকার অন্ধ ব্যক্তি মফিজ উদ্দিন সম্রাট এবং তার সহযোগী মালেক। জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবত মাদক সেবন করে আসছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ইন্সপেক্টর নজরুল ও এসআই জহিরুলের সমন্বয়ে একটি ডিবি টিম সাদা পোশাকে খাইলকৈর এলাকায় অভিযানে যায়। এসময় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সম্রাট ও তার সহযোগীকে মাদক সংক্রান্তে আটক করে ২৭ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করা সংক্রান্তে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সহযোগী মালেকের বক্তব্য
আটক হওয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সম্রাটের সহযোগী আঃ মালেক-এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি ও তার মালিক মাদক সেবন করেন। তাদের কাছে ৫০০ টাকার গাঁজা ছিল। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাদেরকে আটক করে বগারটেক ব্রিজের পূর্ব পাশে নিয়ে যায়। উনার কাছ থেকে ৫ হাজার এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সম্রাটের পকেটে থাকা ২২ হাজার টাকা এসআই জহিরুল নিয়ে নেন। পরে তাদের প্রতিবেশী আমির কন্ট্রাক্টর আরও ৫ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে ২ ঘণ্টা পর তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া ও পুলিশের ভাবমূর্তির প্রশ্ন
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আটক করে উৎকোচের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ায় পুলিশের প্রতি জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা হ্রাস পেয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এ ধরনের অসৎ পুলিশ অফিসারদের কারণে দিন দিন পুলিশ বাহিনীর উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং পুলিশের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদারকি বৃদ্ধি করা উচিত।
ডিবি পুলিশের কর্মকর্তার বক্তব্য
এ ঘটনার বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি দক্ষিণ বিভাগের এসআই জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি আটক করে ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সম্রাটকে মাদকসহ গ্রেফতার করতে ইন্সপেক্টর নজরুলের নেতৃত্বে অভিযানে যাওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। পুলিশের এই কর্মকর্তার বক্তব্যের সাথে স্থানীয়দের বক্তব্যের কোনো মিল পাওয়া যায়নি।