Hi

০৫:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিধানসভা অভিযান, সুকান্ত মজুমদারসহ বিজেপি কর্মীরা গ্রেপ্তার

  • আপডেট : ০৫:৪৭:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • ৬৫৭ জন দেখেছে

কলকাতা, ৩০ জুন ২০২৫: কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের ন্যায় বিচারের দাবিতে এবং “মমতার পাপের ঘোড়ার প্রায়শ্চিত্ত” করতে আজ সোমবার (৩০ জুন) দুপুর তিনটায় ধর্মতলা ডরিনা ক্রসিংয়ের সামনে থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বিধানসভা অভিযান শুরু করলে পুলিশের হাতে আটক হন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন নেতা ও কর্মী।


 

বিক্ষোভ ও পুলিশের বাধা

 

আজকের বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গ শাখার তমগ্ন ঘোষ, কালি খটিক, কুশল পান্ডে, নারায়ণ চ্যাটার্জি সহ অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা। প্রত্যেকের মাথায় ‘মমতার পাপের হাঁড়ি’ লেখা মাটির হাঁড়ি এবং পোস্টার নিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান। র‍্যালি করে ডরিনা ক্রসিং থেকে রানী রাসমণির দিকে পৌঁছানোর আগেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। জনতা পার্টির সদস্যরা ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করলে এবং পুলিশের সাথে কথোপকথন চলার সময় কয়েকজন মহিলা পুলিশ ভারতীয় জনতা পার্টির মহিলা সদস্যদের গায়ে হাত দিলে উত্তেজনা ছড়ায়। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও পুলিশ ফোর্স জোর করে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে।


 

বিজেপি কর্মীদের দাবি ও ক্ষোভ

 

বিক্ষোভকারীরা বারবার ঘোষণা করতে থাকেন, “আপনারা শান্তিপূর্ণ মিছিলে অশান্তি ছড়াবেন না, আমরা প্রতিবাদ করছি ন্যায্য বিচারের দাবিতে, দোষীদের শাস্তির দাবিতে। যারা দোষী তাদেরকে গ্রেপ্তার করুন, কেন প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তার করছেন? আপনাদেরও বাড়িতে মেয়ে আছে, তাই এখন থেকে আপনারাও সচেতন হোন। আমাদের একটাই দাবি, দোষীদের শাস্তি, নয়তো মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ।”

তারা আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনো উন্নতি নেই, বরং একের পর এক ঘটনা এবং ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে না, ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়? একজন নারী হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের সুরক্ষা দিতে পারছেন না, এমনকি নিজের দলের লোক, ছাত্র পরিষদ নেতা, ধর্ষণ করছে, হুমকি দিচ্ছে, কলেজে দাদাগিরি দেখাচ্ছে। এইসব মাস্তানি কোথা থেকে, কাদের জোরে করছে, আর আমরা মেনে নেব না।

আর জি করের ঘটনার এক বছর পূর্ণ হতে না হতেই পুনরায় ঘটে গেল কসবার ঘটনা, অথচ পুলিশ মন্ত্রী চুপ করে বসে আছেন। সারা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আবার পথে নেমেছে ন্যায্য বিচারের দাবি নিয়ে, আমরাও পথে নেমে লড়াই করছি।


 

সরকারের সমালোচনা ও রাজনৈতিক বিতর্ক

 

বক্তারা পার্ক স্ট্রীট, কামদুনি, সন্দেশখালি, হাঁসখালি, আর জি কর এবং কসবার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলি আবারও দেখিয়ে দিল যে মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায় এবং পশ্চিমবঙ্গের কী হাল। বাড়ির অভিভাবকরা কাদের ভরসায় স্কুল-কলেজে মেয়েদের পাঠাবেন, যেখানে নিরাপত্তাই নেই?

অন্যদিকে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষার তীব্র সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানো হয়। অনুব্রত মণ্ডল একজন অফিসারের পরিবার ও তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিলেও কোনো প্রতিবাদ নেই বলে অভিযোগ করা হয়। বিজেপির সদস্যরা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্র দুজনই একই কাটার, যারা শুধু মেয়েদের নিয়ে ‘ঢলাঢলি ও প্রেম’ করে এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সারাদিন নেশায় বেহুঁশ থাকেন, তাই তাদের মুখেই এমন কথা মানায়। তারা অভিযোগ করেন, যারা আজ প্রশাসনের দায়িত্বে আছেন, তারাও চুপ করে সহ্য করেন এবং প্রতিবাদ করতে পারেন না।

সবশেষে, তারা সবাইকে একসাথে গর্জে উঠে ন্যায়ের বিচার, গুন্ডাবাহিনী ও ধর্ষণকারীদের উচিত সাজা এবং মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান। স্লোগান ওঠে, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস!”


ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

ঝিনাইদহে  হুলস্থুল! আ.লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ‘বিগ শট’ নেতারা হাজতে! পুরনো ‘ভাঙচুর’ মামলায় কাঁপছে রাজনীতি! 

কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিধানসভা অভিযান, সুকান্ত মজুমদারসহ বিজেপি কর্মীরা গ্রেপ্তার

আপডেট : ০৫:৪৭:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

কলকাতা, ৩০ জুন ২০২৫: কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের ন্যায় বিচারের দাবিতে এবং “মমতার পাপের ঘোড়ার প্রায়শ্চিত্ত” করতে আজ সোমবার (৩০ জুন) দুপুর তিনটায় ধর্মতলা ডরিনা ক্রসিংয়ের সামনে থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বিধানসভা অভিযান শুরু করলে পুলিশের হাতে আটক হন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন নেতা ও কর্মী।


 

বিক্ষোভ ও পুলিশের বাধা

 

আজকের বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গ শাখার তমগ্ন ঘোষ, কালি খটিক, কুশল পান্ডে, নারায়ণ চ্যাটার্জি সহ অন্যান্য নেতা ও সদস্যরা। প্রত্যেকের মাথায় ‘মমতার পাপের হাঁড়ি’ লেখা মাটির হাঁড়ি এবং পোস্টার নিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখান। র‍্যালি করে ডরিনা ক্রসিং থেকে রানী রাসমণির দিকে পৌঁছানোর আগেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। জনতা পার্টির সদস্যরা ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করলে এবং পুলিশের সাথে কথোপকথন চলার সময় কয়েকজন মহিলা পুলিশ ভারতীয় জনতা পার্টির মহিলা সদস্যদের গায়ে হাত দিলে উত্তেজনা ছড়ায়। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও পুলিশ ফোর্স জোর করে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে।


 

বিজেপি কর্মীদের দাবি ও ক্ষোভ

 

বিক্ষোভকারীরা বারবার ঘোষণা করতে থাকেন, “আপনারা শান্তিপূর্ণ মিছিলে অশান্তি ছড়াবেন না, আমরা প্রতিবাদ করছি ন্যায্য বিচারের দাবিতে, দোষীদের শাস্তির দাবিতে। যারা দোষী তাদেরকে গ্রেপ্তার করুন, কেন প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তার করছেন? আপনাদেরও বাড়িতে মেয়ে আছে, তাই এখন থেকে আপনারাও সচেতন হোন। আমাদের একটাই দাবি, দোষীদের শাস্তি, নয়তো মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ।”

তারা আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনো উন্নতি নেই, বরং একের পর এক ঘটনা এবং ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। দোষীরা শাস্তি পাচ্ছে না, ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়? একজন নারী হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের সুরক্ষা দিতে পারছেন না, এমনকি নিজের দলের লোক, ছাত্র পরিষদ নেতা, ধর্ষণ করছে, হুমকি দিচ্ছে, কলেজে দাদাগিরি দেখাচ্ছে। এইসব মাস্তানি কোথা থেকে, কাদের জোরে করছে, আর আমরা মেনে নেব না।

আর জি করের ঘটনার এক বছর পূর্ণ হতে না হতেই পুনরায় ঘটে গেল কসবার ঘটনা, অথচ পুলিশ মন্ত্রী চুপ করে বসে আছেন। সারা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আবার পথে নেমেছে ন্যায্য বিচারের দাবি নিয়ে, আমরাও পথে নেমে লড়াই করছি।


 

সরকারের সমালোচনা ও রাজনৈতিক বিতর্ক

 

বক্তারা পার্ক স্ট্রীট, কামদুনি, সন্দেশখালি, হাঁসখালি, আর জি কর এবং কসবার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলি আবারও দেখিয়ে দিল যে মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায় এবং পশ্চিমবঙ্গের কী হাল। বাড়ির অভিভাবকরা কাদের ভরসায় স্কুল-কলেজে মেয়েদের পাঠাবেন, যেখানে নিরাপত্তাই নেই?

অন্যদিকে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষার তীব্র সমালোচনা করে তার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানানো হয়। অনুব্রত মণ্ডল একজন অফিসারের পরিবার ও তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিলেও কোনো প্রতিবাদ নেই বলে অভিযোগ করা হয়। বিজেপির সদস্যরা সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্র দুজনই একই কাটার, যারা শুধু মেয়েদের নিয়ে ‘ঢলাঢলি ও প্রেম’ করে এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সারাদিন নেশায় বেহুঁশ থাকেন, তাই তাদের মুখেই এমন কথা মানায়। তারা অভিযোগ করেন, যারা আজ প্রশাসনের দায়িত্বে আছেন, তারাও চুপ করে সহ্য করেন এবং প্রতিবাদ করতে পারেন না।

সবশেষে, তারা সবাইকে একসাথে গর্জে উঠে ন্যায়ের বিচার, গুন্ডাবাহিনী ও ধর্ষণকারীদের উচিত সাজা এবং মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান। স্লোগান ওঠে, “উই ওয়ান্ট জাস্টিস!”