Hi

০৭:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলুকে কারাগারে প্রেরণ, রিমান্ডের প্রস্তুতি

  • আপডেট : ০৭:১০:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
  • ৬৪৬ জন দেখেছে

মশিউর রহমান, রাজশাহী: রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ নজরুল ইসলাম জুলুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে বুধবার নগরীর টিকাপাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে জুলুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী।

জানা গেছে, সন্ত্রাসী জুলু স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ছিলেন এবং রাজশাহীতে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। গত ৫ আগস্ট পদ পরিবর্তনের পর তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করতে শুরু করেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের দাবি করে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের হুমকি দিতেন ও পদবাণিজ্য করতেন। সাধারণ মানুষকে মামলায় ফাঁসিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছেন।

সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসী জুলুর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে প্রায় দেড় ডজন মামলা রয়েছে। নিজেকে বাঁচাতে এক পর্যায়ে তিনি সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন এবং একটি অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুলে সম্পাদক বনে যান। অবৈধভাবে কয়েক মাস আগে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাব দখলে নিয়ে নিজেকে সভাপতি ঘোষণা করেন। এরপর তিনি বেপরোয়া আচরণ শুরু করেন এবং প্রেসক্লাবের সদস্যসহ অন্যান্য সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতেন। তিনি সবসময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন এবং সাংবাদিকদের গুলি করে মারার হুমকিও দিতেন।

এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে প্রায় শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকাল থেকে নগরীর টিকাপাড়ায় জুলুর বাসায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। এসময় তার ছেলে জিম ও এক সহযোগিসহ জুলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রও পাওয়া যায়। পরে সেনাবাহিনী তাদের বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করে।

সন্ত্রাসী জুলু ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ২৯৪ নম্বর আসামি। ওই মামলায় শেখ হাসিনা এক নম্বর আসামি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জুলুসহ তিনজনকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে আগামী মঙ্গলবার রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এদিকে, জুলুর মতো সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকতার ব্যানার ব্যবহার করায় সাংবাদিক নেতারা চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, সন্ত্রাসী কায়দায় প্রেসক্লাবের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে জুলু আরেকটি অপরাধ করেছেন। তার কারণে মহান এ পেশার সম্মান নষ্ট হচ্ছিল। সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করায় সাংবাদিক নেতারা বাহিনীটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং অপরাধ দমনে আগামীতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভাষা সৈনিক পরিবারের সদস্য সাইদুর রহমান বলেন, “সাংবাদিকতা মহান পেশা। এ পেশায় কোনো সন্ত্রাসীর স্থান হবে না। আমরা রাজপথে সোচ্চার ছিলাম, আগামীতেও সোচ্চার থাকবো।”

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

ঝিনাইদহে  হুলস্থুল! আ.লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ‘বিগ শট’ নেতারা হাজতে! পুরনো ‘ভাঙচুর’ মামলায় কাঁপছে রাজনীতি! 

রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জুলুকে কারাগারে প্রেরণ, রিমান্ডের প্রস্তুতি

আপডেট : ০৭:১০:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

মশিউর রহমান, রাজশাহী: রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ নজরুল ইসলাম জুলুকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে বুধবার নগরীর টিকাপাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে জুলুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী।

জানা গেছে, সন্ত্রাসী জুলু স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ছিলেন এবং রাজশাহীতে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। গত ৫ আগস্ট পদ পরিবর্তনের পর তিনি নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করতে শুরু করেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের দাবি করে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের হুমকি দিতেন ও পদবাণিজ্য করতেন। সাধারণ মানুষকে মামলায় ফাঁসিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছেন।

সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসী জুলুর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে প্রায় দেড় ডজন মামলা রয়েছে। নিজেকে বাঁচাতে এক পর্যায়ে তিনি সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন এবং একটি অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল খুলে সম্পাদক বনে যান। অবৈধভাবে কয়েক মাস আগে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাব দখলে নিয়ে নিজেকে সভাপতি ঘোষণা করেন। এরপর তিনি বেপরোয়া আচরণ শুরু করেন এবং প্রেসক্লাবের সদস্যসহ অন্যান্য সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতেন। তিনি সবসময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন এবং সাংবাদিকদের গুলি করে মারার হুমকিও দিতেন।

এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে প্রায় শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকাল থেকে নগরীর টিকাপাড়ায় জুলুর বাসায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। এসময় তার ছেলে জিম ও এক সহযোগিসহ জুলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রও পাওয়া যায়। পরে সেনাবাহিনী তাদের বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করে।

সন্ত্রাসী জুলু ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটি হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত ২৯৪ নম্বর আসামি। ওই মামলায় শেখ হাসিনা এক নম্বর আসামি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জুলুসহ তিনজনকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে আগামী মঙ্গলবার রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এদিকে, জুলুর মতো সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকতার ব্যানার ব্যবহার করায় সাংবাদিক নেতারা চরম বিব্রত ও ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, সন্ত্রাসী কায়দায় প্রেসক্লাবের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে জুলু আরেকটি অপরাধ করেছেন। তার কারণে মহান এ পেশার সম্মান নষ্ট হচ্ছিল। সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করায় সাংবাদিক নেতারা বাহিনীটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং অপরাধ দমনে আগামীতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভাষা সৈনিক পরিবারের সদস্য সাইদুর রহমান বলেন, “সাংবাদিকতা মহান পেশা। এ পেশায় কোনো সন্ত্রাসীর স্থান হবে না। আমরা রাজপথে সোচ্চার ছিলাম, আগামীতেও সোচ্চার থাকবো।”