দিনাজপুর, ১১ জুলাই ২০২৫: অবিশ্বাস্য! মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশ থেকে উধাও হয়েছে ময়লার পাহাড়, বদলে সেখানে শোভা পাচ্ছে সুন্দর ফুলের গাছ! কীভাবে সম্ভব হলো এই ম্যাজিক? নেপথ্যে রয়েছে এক সাহসী সংবাদ এবং একদল পরিবেশপ্রেমী যুবকের অদম্য প্রচেষ্টা!

গত ৯ জুলাই, “দিনাজপুর পলিটেকনিকের পাশে ময়লার ভাগাড়: দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা, যাতায়াতে ভোগান্তি” শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠ এবং বিডি২৪রিপোর্ট ডটকমে একটি বিস্ফোরক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ দ্রুতই ভাইরাল হয়ে ওঠে এবং পৌঁছায় পরিবেশবাদী সংগঠন ‘বিডি ক্লিন’-এর নজরে। আর তারপরই ঘটে অলৌকিক ঘটনা!

আজ শুক্রবার (১১ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা পরিশ্রম করে বিডি ক্লিন দিনাজপুর এবং দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা মিলে সেই বিশাল ময়লার স্তূপ পরিষ্কার করে ফেলেন। শুধু পরিষ্কার করাই নয়, সেই নোংরা স্থানে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি ফুলের গাছ!

দীর্ঘদিন ধরে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দেয়াল ঘেঁষা রাস্তার পাশেই ফেলা হচ্ছিল শহরের সমস্ত ময়লা-আবর্জনা। হাজার হাজার শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়দের প্রতিদিন এই তীব্র দুর্গন্ধ সহ্য করে যাতায়াত করতে হতো। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল এলাকাবাসী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছিল মারাত্মকভাবে।

বিডি ক্লিনের সদস্যরা জানান, “আমরা বিডি২৪রিপোর্ট ও জনকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদটি দেখে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে এমন নোংরা পরিবেশ দেখে আমরা চুপ থাকতে পারিনি। তাই আমরা উদ্যোগ নিয়ে এই স্থানটি পরিষ্কার করে বালুমাটি ফেলে চলাচলের উপযোগী করেছি এবং ময়লা ফেলা বন্ধ করতে ফুলের গাছ লাগিয়ে দিয়েছি।”

স্থানীয়রাও এই উদ্যোগে আপ্লুত। তারা বিডি২৪রিপোর্ট ও দৈনিক জনকণ্ঠকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই ময়লার ভাগাড়ের কারণে আমরা অসহনীয় দুর্ভোগে ছিলাম। আজ বিডি ক্লিন এবং শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগে আমরা মুগ্ধ। সকলেরই সচেতন হওয়া উচিত, যাতে আর কেউ যত্রতত্র ময়লা না ফেলে।”

দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. আব্দুল ওয়াদুদ মন্ডলও সংবাদমাধ্যমগুলোকে এবং বিডি ক্লিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “সংবাদ প্রকাশের ফলেই এই কাজটি সহজ হয়েছে। বিডি ক্লিনের সদস্যরা আমার সাথে যোগাযোগ করার পর আমি বালু ফেলার ব্যবস্থা করেছি। আমি সড়ক বিভাগের সাথেও কথা বলেছি যাতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ওয়ার্কওয়ে তৈরি করা হয়।”

এই ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে, সঠিক তথ্য এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা যেকোনো সমস্যাকে সমাধানে পরিণত করতে পারে। দিনাজপুর পলিটেকনিকের পাশে ময়লার ভাগাড় থেকে ফুলের বাগানে রূপান্তর এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো! এটি শুধু একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নয়, এটি সচেতনতা এবং পরিবর্তনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে!