রাঙ্গুনিয়া, ১৫ জুলাই ২০২৫: অবশেষে ন্যায়বিচার! ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের সন্দ্বীপপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেই শিক্ষক বদিউল আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এই দুঃসাহসিক পদক্ষেপের পর ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে চাপা থাকা ক্ষোভের আগুন যেন এই পদক্ষেপে কিছুটা শান্ত হলো।
বরখাস্তের নির্দেশিকা জারি: কড়া বার্তা প্রশাসনের
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আবদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক বদিউল আলমকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, “কোদালার সন্দ্বীপপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদিউল আলমকে একই স্কুলের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।”
রাঙ্গুনিয়া সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মোহাইমেন এই পদক্ষেপের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষক বদিউল আলমকে বরখাস্ত করার জন্য জেলাতে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল এবং ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
“বারবার ধামাচাপা পড়ায় সে সাহস পেয়েছে!” – ভুক্তভোগী মায়ের বিস্ফোরক মন্তব্য
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমার মেয়ের সাথে ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক বদিউল আলম যৌন নিপীড়ন করেছে। এর আগেও সে একাধিকবার এরকম করেছে। কিন্তু বারবার এসব ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাওয়ায় সে আরও সাহস পেয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে। এতে অন্য শিক্ষকরাও সতর্ক হবে।” এই মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়, এতদিন ধরে চাপা থাকা ক্ষোভ আর হতাশা কেমন ছিল এই পরিবারের।
ক্ষোভের বিস্ফোরণ থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস
উল্লেখ্য, রাঙ্গুনিয়ার কোদালা ইউনিয়নের সন্দীপপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীর উপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রাথমিক পর্যায়ে পাঠদান থেকে সাময়িকভাবে বিরত রাখা হয়েছিল। এই ঘটনার পর এলাকার মানুষের মধ্যে যে চাপা উত্তেজনা ছিল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের এই সিদ্ধান্তের পর তা অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে।
এই বরখাস্তের ঘটনা একটি স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের নিরাপত্তা এবং শিক্ষকের নৈতিকতার সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না। এই সাহসী পদক্ষেপ সমাজে একটি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করবে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের সুরক্ষায় অভিভাবকদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।