গোপালগঞ্জ, ১৬ জুলাই ২০২৫: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সভা শেষে ফেরার পথে তাদের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ আওয়ামী সন্ত্রাসীরা! এই ভয়াবহ হামলার পর গোপালগঞ্জ পরিণত হয়েছে এক রক্তাক্ত রণক্ষেত্রে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে গুলি চালাতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এনসিপি’র মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “পুলিশ-আর্মি নিরাপত্তা দিতে না পারলে যুদ্ধ ঘোষণা করবো!” তার এই আল্টিমেটাম দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
গুলি, সংঘর্ষ, এবং নীরব পুলিশ-সেনাবাহিনীর অভিযোগ!
এনসিপি’র গাড়িবহরে হামলার পর পরই সংঘর্ষ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে গুলি চালাতে হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে, এনসিপি’র মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা দেখেছি এখানে আর্মি নিষ্ক্রিয়, পুলিশ নিষ্ক্রিয়। আমাদের যদি বলা হতো আমরা প্রটেকশন নিয়ে আসতাম। কিন্তু, যখন আমাদের বলা হয়েছে এখানে পরিস্থিতি শান্ত আছে, কিন্তু আমরা বাস্তবে এসে দেখেছি এখানে পরিস্থিতি শান্ত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “পুলিশ থেকে শুরু করে সব প্রশাসন এখানে দলীয়করণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগকে তারা এখনো সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।” তার এই অভিযোগ সরাসরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
দিনের শুরু থেকেই গোপালগঞ্জে সংঘাতের বিস্ফোরণ!
আজকের দিনটি গোপালগঞ্জে শুরু থেকেই ছিল চরম উত্তেজনাপূর্ণ এবং সহিংসতায় ভরা:
- সকালে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ: সদর উপজেলায় পুলিশের একটি গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
- ইউএনও’র গাড়িবহরে হামলা: পুলিশের গাড়িতে হামলার পরপরই সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িবহরেও হামলা করা হয়।
- আ.লীগ-ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মী আটক: দুপুর ১২টার দিকে জেলার বিভিন্নস্থানে নাশকতা, সড়ক অবরোধ ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সদর উপজেলা কংশুর এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীকে আটক করে সেনাবাহিনী।
- এনসিপি সমাবেশ মঞ্চে হামলা: দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় আয়োজিত সমাবেশ মঞ্চে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়, ভাঙচুর করে সাউন্ড বক্স ও মাইক।
- কেন্দ্রীয় নেতাদের আগমন: এরপর দুপুর ২টার দিকে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা, যারা হামলার মুখেও দৃঢ়তার সাথে বক্তব্য রাখেন।
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ হুমকি: কী ঘটবে এরপর?
নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর এই ‘যুদ্ধ ঘোষণার’ হুমকি গোপালগঞ্জের চলমান পরিস্থিতিকে আরও জটিল ও বিপজ্জনক করে তুলেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনা এবং এনসিপি নেতার এমন কড়া আল্টিমেটাম ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, পরিস্থিতি খুব দ্রুতই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। গোপালগঞ্জের এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পরিণতি কী হয়, এবং দেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব কতটা সুদূরপ্রসারী হয়, সেটাই এখন সবার কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।
ট্যাগস: #গোপালগঞ্জ #এনসিপি #নাসিরউদ্দিনপাটোয়ারী #আওয়ামীলীগ #ছাত্রলীগ #রাজনৈতিকসহিংসতা #ব্রেকিংনিউজ #পুলিশেরগুলি #সেনাবাহিনী #যুদ্ধঘোষণা #রাজনৈতিকউত্তেজনা #গাড়িবহরেহামলা
