ঢাকা, ১৬ জুলাই ২০২৫: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গাড়িবহরে হামলার পর এবার জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর হুংকার দিয়েছেন! পুলিশ প্রশাসন ও যৌথবাহিনীর তৎপরতাকে ‘আশাব্যঞ্জক নয়’ মন্তব্য করে তিনি দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তার এই কড়া বার্তা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
সাদিক কায়মের বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্ট: ‘গোপালগঞ্জকে দিল্লির কাছে ইজারা দেইনি!’
নিজের ফেসবুক পোস্টে সাদিক কায়েম লিখেছেন, “গোপালগঞ্জকে আমরা দিল্লির কাছে ইজারা দেইনি। আমার সহযোদ্ধাদের ওপর ন্যূনতম আঘাত আসলে পুরো বাংলাদেশের জনগণ গোপালগঞ্জকে পতিত ফ্যাসিস্টের কব্জা থেকে স্বাধীন করবে ইনশাআল্লাহ।” তার এই বক্তব্য সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে এক চরম হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও লেখেন, “পুলিশ প্রশাসন, যৌথবাহিনীর তৎপরতা আশাব্যঞ্জক নয়। দেশবাসী প্রস্তুত থাকুন।” তার এই আহ্বান ইঙ্গিত দিচ্ছে, পরিস্থিতি যেকোনো মুহূর্তে আরও ভয়াবহ দিকে মোড় নিতে পারে।
সারজিস আলমের অভিযোগ: ‘পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে!’
এর আগে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “গোপালগঞ্জে খুনি হাসিনার দালালেরা আমাদের উপরে আক্রমণ করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছে, পিছু হটছে।”
সারজিস আলম আরও হুংকার দিয়েছিলেন, “আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি তাহলে মুজিববাদের কবর রচনা করেই ফিরব, না হয় ফিরব না। সারা বাংলাদেশের মানুষ গোপালগঞ্জে ছুটে আসুন। গোপালগঞ্জের বিবেকবান ছাত্র জনতা জেগে উঠুন। দালালদের কবর রচনা করার আজকেই শেষ দিন।”
এনসিপি’র গাড়িবহরে হামলা: গোপালগঞ্জে দিনভর সংঘাত!
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জে আজকের দিনটি শুরু থেকেই ছিল চরম সহিংসতায় ভরা। এনসিপি’র পথযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে সকালে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ইউএনও’র গাড়িবহরে হামলা, এবং সমাবেশ মঞ্চে ভাঙচুরের মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে।
দুপুরেই এনসিপি’র নেতারা হামলার মুখে সমাবেশ করেন এবং সভা শেষে যখন তারা ফিরছিলেন, তখন সড়ক অবরোধ করে এনসিপি’র কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই হামলার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে গুলি চালাতে হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
সাদিক কায়মের এই কড়া হুঁশিয়ারি এবং ‘দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকার’ আহ্বান গোপালগঞ্জের চলমান পরিস্থিতিকে এক চরম সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
ট্যাগস: #সাদিককায়েম #ছাত্রশিবির #জুলাইআন্দোলন #গোপালগঞ্জ #রাজনৈতিকসংঘাত #এনসিপি #পুলিশ #সেনাবাহিনী #ব্রেকিংনিউজ #ফেসবুকপোস্ট #মুজিববাদ #আওয়ামীলীগ #ছাত্রলীগ