গোপালগঞ্জ, ১৭ই জুলাই ২০২৫ – গতকাল বুধবার (১৬ই জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় ভয়াবহ সহিংসতা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দিনব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষে শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়, যার জেরে সন্ধ্যায় সরকার ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে। এই কারফিউ বুধবার রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ই জুলাই) বিকেল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং অন্তত ৯ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন জেলা শহরের উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (২৫), থানাপাড়ার রমজান কাজী (২৪), সদর উপজেলার আড়পাড়া এলাকার ইমন তালুকদার (১৮), এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার সোহেল মোল্যা।
গতকাল বিকেলে সভা শেষে ফেরার পথে এনসিপি’র গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়, যা পুলিশ ও হামলাকারীদের মধ্যে দিনভর সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে এনসিপি’র নেতা আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তারা খুলনা শহরে পৌঁছান এবং সার্কিট হাউস ও একটি হোটেলে অবস্থান নেন।
বর্তমানে গোপালগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কারফিউ চলাকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে। শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও, পেটের তাগিদে দু-একজন দিনমজুর এবং দুই-একটি রিকশা রাস্তায় দেখা যাচ্ছে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা, অভিযান বা গ্রেপ্তারের তথ্য পুলিশ সূত্রে জানা যায়নি। জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।