Hi

১০:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোহনপুরে বিএনপি পন্থী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যদের অনাস্থা: একটি বিশ্লেষণ

মোহনপুরে বিএনপি পন্থী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যদের অনাস্থা: একটি বিশ্লেষণ

রাজশাহী, ২১ জুন ২০২৫ – রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ৪ নং মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যগণ অনাস্থা এনে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন। গত ১৫ জুন এই অভিযোগগুলো জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

অভিযোগকারীদের দাবি

অভিযোগকারী ওয়ার্ড সদস্যরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কামাল হোসেন, ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য একরাম আলী, ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নাসির উদ্দীন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জালাল মন্ডল, এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোজাফফর হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাস বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশান সনদ, ট্যাক্স, গোপালপুর দিঘির ইজারার টাকা, এবং দোকান ঘরের ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ। এছাড়াও, বিভিন্ন ভাতার কার্ড ও বরাদ্দ বন্টনে অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন যে, চেয়ারম্যানের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পাল্টা দাবি

তবে, বিএনপি পন্থী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাস এসব অভিযোগকে অপ্রাসঙ্গিক ও চক্রান্তের অংশ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের আমলে নির্বাচিত ওয়ার্ড সদস্য। সেসময় অধিকাংশ ওয়ার্ড সদস্য আওয়ামী পন্থী ছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়ে পরিষদের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এমতাবস্থায় আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যরা আওয়ামী লীগের দোসর, পলাতক চেয়ারম্যান আল আমিন বিশ্বাসের সাথে মিলে চক্রান্ত করে আমাকে পরিষদ থেকে সরাতে চাচ্ছেন।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগের একাধিক ফেসবুক পেজ থেকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিমত

স্থানীয়দের মতে, বিগত দিনে অভিযোগকারী ওয়ার্ড সদস্যরা আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান আল আমিন বিশ্বাসের সাথে যোগসাজশে পরিষদের বরাদ্দ ও ভাতার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে সাধারণ মানুষকে তা প্রদান করতেন। বর্তমানে মেজর আলী বিশ্বাসের কাছ থেকে সেই সুবিধা না পাওয়ায় তাদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তখন তারা গোপনে সাবেক চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে এসব অভিযোগের মাধ্যমে মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত করতে চাচ্ছে। স্থানীয়দের ধারণা, তাদের অবৈধ দাবি পূরণ হলে হয়তো এমন মিথ্যা অভিযোগ থাকবে না। তারা অবাক হয়েছেন যে, সাধারণ মানুষের ফেসবুক বা সংবাদ মাধ্যমে কোনো মন্তব্য নেই, অথচ ‘জয় বাংলা’ নামক ফেসবুকে অভিযোগের কপির সাথে নোংরা ভাষায় ভিত্তিহীন পোস্ট করা হচ্ছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাস আরও বলেন, “আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিষদের কার্যক্রম পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ তারা করেছে, তা তদন্ত হলে আপনারা আরও পরিষ্কার হবেন। আর আমার বিরুদ্ধে সকল মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আমি আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

জামালগঞ্জে ৪ ব্যাংকের উদ্যোগে প্রকাশ্যে কৃষি ঋণ বিতরণ: ১১ কৃষক পেলেন পৌনে ১৮ লাখ টাকা

মোহনপুরে বিএনপি পন্থী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যদের অনাস্থা: একটি বিশ্লেষণ

আপডেট : ০৫:৩৭:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

মোহনপুরে বিএনপি পন্থী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যদের অনাস্থা: একটি বিশ্লেষণ

রাজশাহী, ২১ জুন ২০২৫ – রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ৪ নং মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যগণ অনাস্থা এনে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন। গত ১৫ জুন এই অভিযোগগুলো জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

অভিযোগকারীদের দাবি

অভিযোগকারী ওয়ার্ড সদস্যরা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কামাল হোসেন, ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য একরাম আলী, ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নাসির উদ্দীন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জালাল মন্ডল, এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোজাফফর হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাস বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশান সনদ, ট্যাক্স, গোপালপুর দিঘির ইজারার টাকা, এবং দোকান ঘরের ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ। এছাড়াও, বিভিন্ন ভাতার কার্ড ও বরাদ্দ বন্টনে অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন যে, চেয়ারম্যানের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পাল্টা দাবি

তবে, বিএনপি পন্থী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাস এসব অভিযোগকে অপ্রাসঙ্গিক ও চক্রান্তের অংশ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের আমলে নির্বাচিত ওয়ার্ড সদস্য। সেসময় অধিকাংশ ওয়ার্ড সদস্য আওয়ামী পন্থী ছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়ে পরিষদের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এমতাবস্থায় আওয়ামী পন্থী ওয়ার্ড সদস্যরা আওয়ামী লীগের দোসর, পলাতক চেয়ারম্যান আল আমিন বিশ্বাসের সাথে মিলে চক্রান্ত করে আমাকে পরিষদ থেকে সরাতে চাচ্ছেন।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, আওয়ামী লীগের একাধিক ফেসবুক পেজ থেকে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিমত

স্থানীয়দের মতে, বিগত দিনে অভিযোগকারী ওয়ার্ড সদস্যরা আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান আল আমিন বিশ্বাসের সাথে যোগসাজশে পরিষদের বরাদ্দ ও ভাতার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে সাধারণ মানুষকে তা প্রদান করতেন। বর্তমানে মেজর আলী বিশ্বাসের কাছ থেকে সেই সুবিধা না পাওয়ায় তাদের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তখন তারা গোপনে সাবেক চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে এসব অভিযোগের মাধ্যমে মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত করতে চাচ্ছে। স্থানীয়দের ধারণা, তাদের অবৈধ দাবি পূরণ হলে হয়তো এমন মিথ্যা অভিযোগ থাকবে না। তারা অবাক হয়েছেন যে, সাধারণ মানুষের ফেসবুক বা সংবাদ মাধ্যমে কোনো মন্তব্য নেই, অথচ ‘জয় বাংলা’ নামক ফেসবুকে অভিযোগের কপির সাথে নোংরা ভাষায় ভিত্তিহীন পোস্ট করা হচ্ছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেজর আলী বিশ্বাস আরও বলেন, “আমি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে পরিষদের কার্যক্রম পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ তারা করেছে, তা তদন্ত হলে আপনারা আরও পরিষ্কার হবেন। আর আমার বিরুদ্ধে সকল মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আমি আইনগতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”