দীর্ঘ ৪৫ বছরেও প্রশস্ত করা হয়নি নওগাঁ টু আত্রাই সরু সড়ক -ঘটছে দুর্ঘটনা

নওগাঁ প্রতিনিধি সাইফুল ইসলামের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নওগাঁ থেকে রাণীনগর-আত্রাই সড়কটি গত ৪৫ বছরেও প্রশস্ত করা হয়নি, যার ফলস্বরূপ প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। একসময় নওগাঁ থেকে নাটোর যাতায়াতের প্রধান সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত এই পথটি বর্তমানে তিনটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠেছে।

নওগাঁ শহরের কাঁঠালতলী মোড় থেকে আত্রাই উপজেলা পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির প্রশস্ততা মাত্র ১০-১২ ফুট, যা ক্রমবর্ধমান যানবাহনের চাপ সামলাতে সম্পূর্ণ অক্ষম। বিশেষ করে ৯০ ডিগ্রি কোণের তীক্ষ্ণ বাঁকগুলোতে এবং সরু স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা বড় ও ছোট যানবাহনগুলোর পারাপার হতে গিয়ে প্রায়শই উল্টে যাওয়া বা দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটছে। সড়কের দুই পাশে জনবসতি, হাট-বাজার, ব্যবসা কেন্দ্র এবং ধানের চাতাল গড়ে ওঠায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।

সড়কটি দুটি ভিন্ন দপ্তরের আওতাধীন হওয়ায় এর প্রশস্তকরণে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশ নওগাঁ সড়ক বিভাগের অধীনে এবং বাকি ১৭ কিলোমিটার অংশ নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ছোট যমুনা নদীর বেরিবাঁধ। এই দাপ্তরিক বিভাজনের কারণে ভূমি অধিগ্রহণ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরের পর বছর ধরে বিলম্ব হচ্ছে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানিয়েছেন, বাঁধটির দুর্বল স্থানগুলো মেরামত করা হয়েছে, তবে ভূমি অধিগ্রহণ না থাকায় এটি প্রশস্ত করা সম্ভব হয়নি। তিনি ২৮ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণের জন্য ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) প্রেরণের কথা উল্লেখ করেছেন এবং অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন।

নওগাঁ সড়ক বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দীক জানান, সড়কের কিছু অংশ নতুন করে পাকা করা হয়েছে এবং মেরামত কাজ অব্যাহত আছে। তবে এটি অনেক পুরাতন হওয়ায় দ্রুত আধুনিকায়ন করা জরুরি। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠানোর কথা জানিয়েছেন এবং অর্থ বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল হাসান এই সড়কের গুরুত্ব অনুধাবন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তিনি মনে করেন, এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য সড়কটি প্রশস্ত ও আধুনিকায়ন করা অপরিহার্য এবং উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দ্রুত প্রশস্ত করে আধুনিকায়ন করা হলে নওগাঁ, রাণীনগর এবং আত্রাই উপজেলার লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ কমবে এবং দুর্ঘটনার হার হ্রাস পাবে।