Hi

০৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দিনাজপুরের বিরলে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন: ভুক্তভোগী নিজেই সাজিয়েছিলেন ঘটনা

দিনাজপুর, ২৬ জুন ২০২৫: দিনাজপুরের বিরল থানায় “দিনে দুপুরে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই” এর একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ছিনতাইয়ের শিকার বলে দাবি করা ব্যবসায়ী নিজেই ঋণের দায় থেকে বাঁচতে এই নাটক সাজিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গতকাল বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংবাদ পান যে, বিরল থানাধীন বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভুক্তভোগী মোঃ মইনুল ইসলাম (৫৫) পুলিশকে জানান, তিনি বাড়ি থেকে ২৬ লক্ষ টাকা এবং এনআরবিসি ব্যাংক বিরল শাখা থেকে ৮ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে মোট ৩৪ লক্ষ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে অগ্রণী ব্যাংক স্টেশন রোড শাখা দিনাজপুরে যাচ্ছিলেন ঋণ পরিশোধের জন্য। পথিমধ্যে বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজের কাছে পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীরা তার পথ রোধ করে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।

সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার দিনাজপুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর পুলিশ সুপার দিনাজপুর মহোদয়ের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত টিম অর্থসংশ্লিষ্ট স্থানসমূহে নানা কৌশলে অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে তদন্ত টিম বুঝতে পারে যে, মোঃ মইনুল ইসলাম ব্যবসা জনিত কারণে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিকভাবে ঋণগ্রস্ত ছিলেন এবং তিনি ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া বা ঋণ পরিশোধের সময় পাওয়ার আশায় কৌশলে টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছেন।

অনুসন্ধানের একপর্যায়ে তদন্ত টীম মোঃ মইনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে তার বাড়ি তল্লাশি করার জন্য রওনা হলে তিনি নিজের ভুল স্বীকার করেন এবং তার টাকা ছিনতাইয়ের সাজানো নাটকের কথা স্বীকার করেন।

পরবর্তীতে মোঃ মইনুল ইসলাম তার বাড়ি সংলগ্ন অফিস ঘর থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, মোটরসাইকেলের চাবি এবং ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত ৮ লক্ষ টাকাসহ মোট ১১ লক্ষ টাকা তদন্ত টিমের নিকট প্রদান করেন। নিরাপত্তা জনিত কারণে মোঃ মইনুল ইসলামের ইচ্ছায় ১১ লক্ষ টাকা থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, মোঃ মইনুল ইসলামের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক ছিল।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

পরিবেশ রক্ষায় মাটিরাঙ্গায় ব্যতিক্রমী বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ

দিনাজপুরের বিরলে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন: ভুক্তভোগী নিজেই সাজিয়েছিলেন ঘটনা

আপডেট : ০৩:৪৪:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

দিনাজপুর, ২৬ জুন ২০২৫: দিনাজপুরের বিরল থানায় “দিনে দুপুরে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই” এর একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ছিনতাইয়ের শিকার বলে দাবি করা ব্যবসায়ী নিজেই ঋণের দায় থেকে বাঁচতে এই নাটক সাজিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গতকাল বুধবার (২৫ জুন) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংবাদ পান যে, বিরল থানাধীন বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভুক্তভোগী মোঃ মইনুল ইসলাম (৫৫) পুলিশকে জানান, তিনি বাড়ি থেকে ২৬ লক্ষ টাকা এবং এনআরবিসি ব্যাংক বিরল শাখা থেকে ৮ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে মোট ৩৪ লক্ষ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে অগ্রণী ব্যাংক স্টেশন রোড শাখা দিনাজপুরে যাচ্ছিলেন ঋণ পরিশোধের জন্য। পথিমধ্যে বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজের কাছে পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীরা তার পথ রোধ করে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।

সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার দিনাজপুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর পুলিশ সুপার দিনাজপুর মহোদয়ের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত টিম অর্থসংশ্লিষ্ট স্থানসমূহে নানা কৌশলে অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধানে তদন্ত টিম বুঝতে পারে যে, মোঃ মইনুল ইসলাম ব্যবসা জনিত কারণে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিকভাবে ঋণগ্রস্ত ছিলেন এবং তিনি ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া বা ঋণ পরিশোধের সময় পাওয়ার আশায় কৌশলে টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছেন।

অনুসন্ধানের একপর্যায়ে তদন্ত টীম মোঃ মইনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে তার বাড়ি তল্লাশি করার জন্য রওনা হলে তিনি নিজের ভুল স্বীকার করেন এবং তার টাকা ছিনতাইয়ের সাজানো নাটকের কথা স্বীকার করেন।

পরবর্তীতে মোঃ মইনুল ইসলাম তার বাড়ি সংলগ্ন অফিস ঘর থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, মোটরসাইকেলের চাবি এবং ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত ৮ লক্ষ টাকাসহ মোট ১১ লক্ষ টাকা তদন্ত টিমের নিকট প্রদান করেন। নিরাপত্তা জনিত কারণে মোঃ মইনুল ইসলামের ইচ্ছায় ১১ লক্ষ টাকা থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, মোঃ মইনুল ইসলামের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক ছিল।