Hi

০১:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ডিসকর্ড’ অ্যাপসের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নিল নেপালের ‘জেন-জি প্রজন্ম

  • আপডেট : ০৭:৪৪:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৫২২ জন দেখেছে

নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী: ডিসকর্ড ভোটে নির্বাচিত সুশীলা কার্কি

নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন—যা এক ঐতিহাসিক মাইলফলক তো বটেই, একইসঙ্গে ডিজিটাল যুগে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনাও।

কে এই সুশীলা কার্কি?

সুশীলা কার্কি ছিলেন নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি। দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান, প্রশাসনিক সংস্কার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে তার ভূমিকা তাকে জনগণের আস্থার প্রতীক করে তোলে।

 অনন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া: ভোট হয়েছে ডিসকর্ডে

নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর, “Youth Against Corruption” নামে একটি ডিসকর্ড সার্ভার—যার সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি—সেখানে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে অনলাইন ভোটের আয়োজন করা হয়।সুশীলা কার্কি পান ৭,৭১৩ ভোট এবং ৫০% সমর্থন, যা তাকে ‘ডিসকর্ড-নির্বাচিত’ নেত্রীতে রূপ দেয়।

 কেন ডিসকর্ড?

ডিসকর্ড মূলত গেমারদের কমিউনিকেশন প্ল্যাটফর্ম হলেও, কোভিড-১৯ এর সময় থেকে ‘Gen Z’ প্রজন্মের কাছে এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার ক্ষেত্রেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

  • সার্ভারে থাকতে পারে ৫ লাখ সদস্য
  • তাৎক্ষণিক অডিও/ভিডিও/টেক্সট চ্যানেলে যোগাযোগ
  • ভোটিং, তথ্য যাচাই, জরুরি হেল্পলাইনসহ প্রচুর ফিচার

এই ইনফ্রাস্ট্রাকচার তরুণদের মাঝে সংগঠিত রাজনৈতিক আলোচনার ডিজিটাল স্পেস তৈরি করেছে। কার্কির নিয়োগের পরে কী ঘটেছে?

সুশীলা কার্কি ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর—

  • তিনি রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল ও সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল–এর সঙ্গে বৈঠক করেন।
  • ‘অন্তর্বর্তী জাতীয় ঐক্য সরকার’ গঠনের জন্য রূপরেখা দেন।
  • তার নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে একটি স্বতঃস্ফূর্ত জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে, যদিও প্রক্রিয়াটি এখনো সাংবিধানিকভাবে বৈধতা পাচ্ছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

 কিছু সমালোচনাও রয়েছে…

ডিসকর্ড ভোট নিয়ে কিছু ‘Gen Z’ সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন—

  • ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে
  • সার্ভারে বট অ্যাকাউন্টের সম্ভাবনা
  • প্রক্রিয়ার আইনি বৈধতা

এবং এসব কারণে নির্বাচনটির প্রতিনিধিত্বশীলতা নিয়ে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

প্রযুক্তি ও রাজনীতির সম্মিলন: ভবিষ্যতের পথ?

নেপালের এই ঘটনা কেবল একটি দেশে প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ নয়, বরং:

“ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কীভাবে তরুণ প্রজন্মকে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত করতে পারে”—তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

সুশীলা কার্কির নিয়োগ প্রমাণ করেছে, যেখানে রাজনীতির প্রচলিত কাঠামো তরুণদের কাছে অনুপযোগী হয়ে পড়ে, সেখানে প্রযুক্তিই হতে পারে তাদের শক্তিশালী হাতিয়ার
নেপালের অভিজ্ঞতা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্যও একটি রোল মডেল হতে পারে—যেখানে রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

লেখক সম্পর্কে তথ্য

পলাতক হাসিনার জন্মদিন পালন ও গোপন বৈঠক, কলেজ অধ্যক্ষ বেলাল গ্রেফতার

‘ডিসকর্ড’ অ্যাপসের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নিল নেপালের ‘জেন-জি প্রজন্ম

আপডেট : ০৭:৪৪:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী: ডিসকর্ড ভোটে নির্বাচিত সুশীলা কার্কি

নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন—যা এক ঐতিহাসিক মাইলফলক তো বটেই, একইসঙ্গে ডিজিটাল যুগে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনাও।

কে এই সুশীলা কার্কি?

সুশীলা কার্কি ছিলেন নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি। দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান, প্রশাসনিক সংস্কার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে তার ভূমিকা তাকে জনগণের আস্থার প্রতীক করে তোলে।

 অনন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া: ভোট হয়েছে ডিসকর্ডে

নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর, “Youth Against Corruption” নামে একটি ডিসকর্ড সার্ভার—যার সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি—সেখানে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে অনলাইন ভোটের আয়োজন করা হয়।সুশীলা কার্কি পান ৭,৭১৩ ভোট এবং ৫০% সমর্থন, যা তাকে ‘ডিসকর্ড-নির্বাচিত’ নেত্রীতে রূপ দেয়।

 কেন ডিসকর্ড?

ডিসকর্ড মূলত গেমারদের কমিউনিকেশন প্ল্যাটফর্ম হলেও, কোভিড-১৯ এর সময় থেকে ‘Gen Z’ প্রজন্মের কাছে এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার ক্ষেত্রেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

  • সার্ভারে থাকতে পারে ৫ লাখ সদস্য
  • তাৎক্ষণিক অডিও/ভিডিও/টেক্সট চ্যানেলে যোগাযোগ
  • ভোটিং, তথ্য যাচাই, জরুরি হেল্পলাইনসহ প্রচুর ফিচার

এই ইনফ্রাস্ট্রাকচার তরুণদের মাঝে সংগঠিত রাজনৈতিক আলোচনার ডিজিটাল স্পেস তৈরি করেছে। কার্কির নিয়োগের পরে কী ঘটেছে?

সুশীলা কার্কি ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর—

  • তিনি রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল ও সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল–এর সঙ্গে বৈঠক করেন।
  • ‘অন্তর্বর্তী জাতীয় ঐক্য সরকার’ গঠনের জন্য রূপরেখা দেন।
  • তার নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে একটি স্বতঃস্ফূর্ত জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে, যদিও প্রক্রিয়াটি এখনো সাংবিধানিকভাবে বৈধতা পাচ্ছে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

 কিছু সমালোচনাও রয়েছে…

ডিসকর্ড ভোট নিয়ে কিছু ‘Gen Z’ সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন—

  • ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে
  • সার্ভারে বট অ্যাকাউন্টের সম্ভাবনা
  • প্রক্রিয়ার আইনি বৈধতা

এবং এসব কারণে নির্বাচনটির প্রতিনিধিত্বশীলতা নিয়ে কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

প্রযুক্তি ও রাজনীতির সম্মিলন: ভবিষ্যতের পথ?

নেপালের এই ঘটনা কেবল একটি দেশে প্রথম নারী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ নয়, বরং:

“ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কীভাবে তরুণ প্রজন্মকে ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত করতে পারে”—তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।

সুশীলা কার্কির নিয়োগ প্রমাণ করেছে, যেখানে রাজনীতির প্রচলিত কাঠামো তরুণদের কাছে অনুপযোগী হয়ে পড়ে, সেখানে প্রযুক্তিই হতে পারে তাদের শক্তিশালী হাতিয়ার
নেপালের অভিজ্ঞতা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্যও একটি রোল মডেল হতে পারে—যেখানে রাজনৈতিক সচেতনতা ও অংশগ্রহণের জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।