ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একজন মুখপাত্র রোববার (১৫ জুন) এক বিবৃতিতে দখলীকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বসবাসকারী জায়োনিস্টদের এখনই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। এই অঞ্চলের কোনো অংশই আর তাদের জন্য নিরাপদ থাকবে না বলে ইরান জানিয়েছে, যা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল।
সশস্ত্র বাহিনীর যোগাযোগ কেন্দ্রের মুখপাত্র কর্নেল রেজা সাইয়্যাদ বলেছেন, “ইরানের বীর যোদ্ধারা দখলীকৃত সব এলাকাকে ঘিরে ফেলবে। তাই ওই অঞ্চলের অধিবাসীদের সতর্কবার্তা গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করা উচিত।” তিনি ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ‘অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত’ দখলীকৃত ভূখণ্ডের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং এর ফলাফল অত্যন্ত ‘বিধ্বংসী, শিক্ষণীয় ও অনুশোচনাদায়ক’ হবে।
কর্নেল সাইয়্যাদ আরও দাবি করেন, ইরানের হাতে দখলীকৃত এলাকাগুলোর সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে এবং যেকোনো সময় আঘাত হানতে সক্ষম তারা। তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক রাতগুলোতে ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি, নিরাপত্তা স্থাপনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কেন্দ্র, এমনকি কমান্ডার ও বিজ্ঞানীদের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে। কর্নেল সাইয়্যাদের মতে, আপাতদৃষ্টিতে সুরক্ষিত বাংকার বা আন্ডারগ্রাউন্ড শেল্টারও আর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবে না।
তিনি জায়োনিস্ট সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, তাদের অপরাধগুলোর জন্য দখলীকৃত ভূখণ্ডের মানুষ যেন মানবঢাল হয়ে না পড়ে—তাই তারা যেন সেনা ঘাঁটি বা সেনা-বিজ্ঞানীদের আশেপাশে অবস্থান করা থেকে বিরত থাকে। এই হুঁশিয়ারি আসে গত ১৩ জুন ভোরে ইসরায়েলের তেহরানের আবাসিক অঞ্চল ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রেক্ষাপটে, যেখানে অন্তত ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানী ও একাধিক সামরিক কমান্ডার নিহত হন বলে ইরান দাবি করেছে।
ওই ইসরায়েলি হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়ে ইসরায়েলের জ্বালানি কেন্দ্র, যুদ্ধবিমান তৈরির কারখানা এবং সেনা ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। ইরান জানিয়েছে, এই “প্রতিশোধ থেমে থাকবে না যতক্ষণ না ইসরায়েল অনুতপ্ত হয়”। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান এখন দখলীকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম এবং গাজা উপত্যকায় বসবাসরত ইসরায়েলি নাগরিকদের সরাসরি হুমকি দিচ্ছে, যা যুদ্ধক্ষেত্র সম্প্রসারণের পূর্বাভাস হিসেবে দেখা হচ্ছে।