Hi

১২:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু: রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও অভিযোগ

কুমিল্লায় পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু: রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও অভিযোগ

কুমিল্লা, ২১ জুন: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের হেফাজতে ওয়াইফাই ও ডিশ ব্যবসায়ী শেখ জুয়েলের (৪৫) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শেখ জুয়েল বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের বাঙ্গরা গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে।

জুয়েলের মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। কেউ তাকে বিএনপির নেতা দাবি করছেন, আবার কেউ বলছেন জুয়েল দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্থানীয়দের মতে, জুয়েল একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও গত কয়েক বছর ধরে তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন না এবং ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। তবে তার ছোট ভাই শেখ শাহপরান রুবেল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

পুলিশের ভাষ্যমতে, জুয়েল মাদকাসক্ত ছিলেন। তাকে একটি বাড়ি থেকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে থানায় আনা হয়। থানায় আনার পর জুয়েল বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানেই তার মৃত্যু হয়। থানা পুলিশ তাকে নির্যাতন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তার স্বামী ওয়াইফাই বিল কালেকশন করতে বেরিয়ে যান। দুপুরের পর তিনি খবর পান, পুলিশ তার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। থানায় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পরে অনেক অনুরোধের পর দেখা হলে জুয়েল তাকে জানান যে, বিনা কারণে পুলিশ তাকে আটক করেছে।

নিহতের ছেলে শেখ সিহাব বলেন, “বিনা অপরাধে পুলিশ আমার বাবাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলেছে। আমার বাবাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারেও পুলিশ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা হাসপাতালে গিয়ে বাবার মৃতদেহ দেখতে পাই।”

বাঙ্গরা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শেখ শফিকুল ইসলাম জানান, তার চাচাতো ভাই জুয়েলকে বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই আল আমিন ধরে নিয়ে গেছেন বলে তিনি খবর পান। রাত সাড়ে ৮টায় ফোন করে জুয়েলের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ তাকে মুরাদনগর হাসপাতালে আসতে বলে। হাসপাতালে গিয়ে তিনি দেখেন তার ভাইকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছে।

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক জানান, রাত ৮টা ৫০ মিনিটে পুলিশ ভিকটিমকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা তাকে মৃত দেখতে পান।

বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ৭০ পিস ইয়াবাসহ জুয়েলকে আটক করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ। তিনি অসুস্থ বোধ করলে তাকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পূর্বেও জুয়েল একবার হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

শিক্ষকদের পায়ে ফুল, আর সেই সঙ্গে ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ নিয়ে ঝড় তোলা পাঠচক্র! ঝিনাইদহ বন্ধুসভার এক অন্যরকম শিক্ষক দিবস উদযাপন, যা মন জয় করেছে সবার! ঝিনাইদহ: ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ নিয়ে কবিতা-আলোচনা!

কুমিল্লায় পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু: রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও অভিযোগ

আপডেট : ১২:৩৮:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

কুমিল্লায় পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু: রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও অভিযোগ

কুমিল্লা, ২১ জুন: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের হেফাজতে ওয়াইফাই ও ডিশ ব্যবসায়ী শেখ জুয়েলের (৪৫) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শেখ জুয়েল বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়নের বাঙ্গরা গ্রামের মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে।

জুয়েলের মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। কেউ তাকে বিএনপির নেতা দাবি করছেন, আবার কেউ বলছেন জুয়েল দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্থানীয়দের মতে, জুয়েল একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করলেও গত কয়েক বছর ধরে তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন না এবং ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। তবে তার ছোট ভাই শেখ শাহপরান রুবেল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

পুলিশের ভাষ্যমতে, জুয়েল মাদকাসক্ত ছিলেন। তাকে একটি বাড়ি থেকে ৭০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে থানায় আনা হয়। থানায় আনার পর জুয়েল বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানেই তার মৃত্যু হয়। থানা পুলিশ তাকে নির্যাতন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে তার স্বামী ওয়াইফাই বিল কালেকশন করতে বেরিয়ে যান। দুপুরের পর তিনি খবর পান, পুলিশ তার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। থানায় গিয়ে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে প্রথমে পুলিশ বাধা দেয়। পরে অনেক অনুরোধের পর দেখা হলে জুয়েল তাকে জানান যে, বিনা কারণে পুলিশ তাকে আটক করেছে।

নিহতের ছেলে শেখ সিহাব বলেন, “বিনা অপরাধে পুলিশ আমার বাবাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলেছে। আমার বাবাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারেও পুলিশ আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা হাসপাতালে গিয়ে বাবার মৃতদেহ দেখতে পাই।”

বাঙ্গরা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শেখ শফিকুল ইসলাম জানান, তার চাচাতো ভাই জুয়েলকে বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই আল আমিন ধরে নিয়ে গেছেন বলে তিনি খবর পান। রাত সাড়ে ৮টায় ফোন করে জুয়েলের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ তাকে মুরাদনগর হাসপাতালে আসতে বলে। হাসপাতালে গিয়ে তিনি দেখেন তার ভাইকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে রাখা হয়েছে।

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক জানান, রাত ৮টা ৫০ মিনিটে পুলিশ ভিকটিমকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা তাকে মৃত দেখতে পান।

বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ৭০ পিস ইয়াবাসহ জুয়েলকে আটক করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ। তিনি অসুস্থ বোধ করলে তাকে চিকিৎসার জন্য মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পূর্বেও জুয়েল একবার হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। নিহতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে পাঠানো হয়েছে।