ভূরুঙ্গামারীতে ভূমি অফিসে ৩২ পদ শূন্য: জনভোগান্তি চরমে

ভূরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে ৩২টি গুরুত্বপূর্ণ পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। মোট ৫৬টি পদের বিপরীতে বর্তমানে মাত্র ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। বিশেষ করে চর-ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গত ৪ মাস ধরে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা না থাকায় সেখানকার বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।

জনবল সংকটের ভয়াবহ চিত্র

উপজেলা ভূমি অফিসে সহকারী কমিশনার (ভূমি), কানুনগো, প্রধান সহকারী কাম-হিসাব রক্ষক, সার্ভেয়ার, সার্টিফিকেট সহকারী, ক্রেডিট চেকিং কাম-সায়রাত সহকারী (২টি), অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর, প্রসেস সার্ভেয়ার (২টি), অফিস সহায়ক (১০টি) এবং চেইনম্যান (২টি) পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে একজন প্রধান সহকারী কাম-হিসাব রক্ষক, একজন প্রসেস সার্ভেয়ার এবং একজন অফিস সহায়ক প্রেষণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন।

ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতেও চিত্র একই রকম। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১০ জন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার দরকার হলেও বর্তমানে মাত্র ৪ জন কর্মরত আছেন। এছাড়া ৪ জন ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তার পদও শূন্য। সব মিলিয়ে, ৫৬টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ৩২টিই খালি পড়ে আছে।

সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ

প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে ভূমি অফিসগুলোতে মাসের পর মাস ঘুরেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। চর-ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়ন ভূমি অফিস বন্ধ থাকায় ওই এলাকার মানুষ খাজনা ও খারিজ করতে পারছেন না, যার ফলে জরুরি প্রয়োজনে জমি বিক্রি করতে গিয়েও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

চর-ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের বাসিন্দা সামছুল হক ও রশিদুল ইসলাম জানান, তারা প্রায় ৩ মাস ধরে খারিজের জন্য ঘুরছেন, কিন্তু তহশীলদার না থাকায় জমি খারিজ করতে পারছেন না। চরভূরুঙ্গামারীর চেয়ারম্যান মানিক উদ্দিন বলেন, ৪ মাস ধরে তহশীলদার না থাকায় এলাকার জনগণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। অন্যদিকে, সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষের নিরুপায়তা

উপজেলা ভূমি অফিসে মাস্টার রোলে ২ জন বহিরাগত নিয়োগ দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, শূন্যপদে পদায়ন করার ক্ষমতা তার নেই। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।

সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, দ্রুত এই জনবল সংকট নিরসনে কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং ভূরুঙ্গামারীর ভূমি অফিসগুলোতে স্বাভাবিক সেবা কার্যক্রম ফিরে আসবে।