Hi

০৬:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খাগড়াছড়িতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ: পিসিসিপি’র আয়োজনে বৈষম্যের অভিযোগ

খাগড়াছড়িতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ: পিসিসিপি’র আয়োজনে বৈষম্যের অভিযোগ

খাগড়াছড়ি, ২২ জুন ২০২৫ – পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)-এর খাগড়াছড়ি জেলা শাখা আজ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছে। এই আয়োজনটি পিসিসিপি’র অস্থায়ী কার্যালয়ে বিকাল ৩:৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান ও অংশগ্রহণকারী

পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মো. মুজাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান-এর সঞ্চালনায় এই বিতরণ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদ। পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বক্তাদের মুখে বৈষম্যের চিত্র

অনুষ্ঠানে বক্তারা পার্বত্য বাঙালি জনগোষ্ঠীর বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, একই পাহাড়ের দুর্গম ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বসবাস করা সত্ত্বেও পার্বত্য বাঙালিরা কোটা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর ফলে শিক্ষা, চাকরি, আর্থিক এবং সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে তারা মারাত্মকভাবে পিছিয়ে পড়ছেন। বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জনসংখ্যার অর্ধেক হওয়ার পরও পরিসংখ্যানগতভাবে বাঙালিরা অবহেলিত, প্রান্তিক এবং দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হচ্ছেন।

শিক্ষায় কোটা বঞ্চনা ও এর প্রভাব

বক্তারা তাদের বক্তব্যে শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্যের বিষয়টি বিশেষভাবে তুলে ধরেন। তারা জানান, যেখানে চাকরিতে অবাঙালিদের জন্য শতকরা পাঁচ ভাগ কোটা সংরক্ষণের বিধান রয়েছে, সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিদের জন্য শিক্ষা বা চাকরির ক্ষেত্রে তেমন কোনো কোটা সুবিধা নেই। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে উপজাতি কোটা থাকলেও, কোটা সুবিধা এবং অন্যান্য সাংবিধানিক সম-অধিকারের অভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি হওয়া সত্ত্বেও বাঙালিদের শিক্ষার হার মাত্র ২৩ শতাংশ। বক্তাদের মতে, এই বৈষম্য শুধু সম্প্রদায়গত বিভেদই তৈরি করছে না, বরং দেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নাগরিককে যোগ্য মানবসম্পদে পরিণত করে দেশ ও জাতি গঠনে কাজে লাগানোর সুযোগও ব্যাহত করছে।

আলোচনা সভার শেষে শতাধিক এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা উপকরণ তুলে দেওয়া হয়।

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

জনপ্রিয়

কেসি কলেজের ছাত্র মনির খান সারাদেশের মধ্যে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় তৃতীয়

খাগড়াছড়িতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ: পিসিসিপি’র আয়োজনে বৈষম্যের অভিযোগ

আপডেট : ০২:৩২:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

খাগড়াছড়িতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ: পিসিসিপি’র আয়োজনে বৈষম্যের অভিযোগ

খাগড়াছড়ি, ২২ জুন ২০২৫ – পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি)-এর খাগড়াছড়ি জেলা শাখা আজ এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছে। এই আয়োজনটি পিসিসিপি’র অস্থায়ী কার্যালয়ে বিকাল ৩:৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান ও অংশগ্রহণকারী

পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মো. মুজাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান-এর সঞ্চালনায় এই বিতরণ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদ। পিসিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বক্তাদের মুখে বৈষম্যের চিত্র

অনুষ্ঠানে বক্তারা পার্বত্য বাঙালি জনগোষ্ঠীর বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, একই পাহাড়ের দুর্গম ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বসবাস করা সত্ত্বেও পার্বত্য বাঙালিরা কোটা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর ফলে শিক্ষা, চাকরি, আর্থিক এবং সামাজিক মর্যাদার দিক থেকে তারা মারাত্মকভাবে পিছিয়ে পড়ছেন। বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জনসংখ্যার অর্ধেক হওয়ার পরও পরিসংখ্যানগতভাবে বাঙালিরা অবহেলিত, প্রান্তিক এবং দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হচ্ছেন।

শিক্ষায় কোটা বঞ্চনা ও এর প্রভাব

বক্তারা তাদের বক্তব্যে শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্যের বিষয়টি বিশেষভাবে তুলে ধরেন। তারা জানান, যেখানে চাকরিতে অবাঙালিদের জন্য শতকরা পাঁচ ভাগ কোটা সংরক্ষণের বিধান রয়েছে, সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিদের জন্য শিক্ষা বা চাকরির ক্ষেত্রে তেমন কোনো কোটা সুবিধা নেই। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে উপজাতি কোটা থাকলেও, কোটা সুবিধা এবং অন্যান্য সাংবিধানিক সম-অধিকারের অভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি হওয়া সত্ত্বেও বাঙালিদের শিক্ষার হার মাত্র ২৩ শতাংশ। বক্তাদের মতে, এই বৈষম্য শুধু সম্প্রদায়গত বিভেদই তৈরি করছে না, বরং দেশের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নাগরিককে যোগ্য মানবসম্পদে পরিণত করে দেশ ও জাতি গঠনে কাজে লাগানোর সুযোগও ব্যাহত করছে।

আলোচনা সভার শেষে শতাধিক এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা উপকরণ তুলে দেওয়া হয়।