মাগুরায় ব্যক্তিকে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ: মামলা দায়ের, তদন্ত শুরু
ঝিনাইদহ, ২৩ জুন ২০২৫: মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে মো. কমিরুল মোল্যা (৩০) নামে একজনকে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
আজ রবিবার (২২ জুন) এ ঘটনায় পেশায় রাজমিস্ত্রি কমিরুলের বড় ভাই মো. জমিরুল মোল্যা মহম্মদপুর থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।
এর আগে গত ১৯ জুন দুপুরে মহম্মদপুর উপজেলার রাড়ীখালী উত্তর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে ভর্তি কমিরুল মোল্যা বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আব্দুল্লাহর সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমি রাড়ীখালী বাজার থেকে চা খেয়ে ঈদগাহ বাজারের দিকে আসছিলাম। পথিমধ্যে আব্দুল্লাহদের বাড়ির কাছে পৌঁছালে আমাকে একটি কাটা বাঁশ ঝাড় থেকে বের করার অনুরোধ করে বাঁশ বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে পেছন থেকে আব্দুল্লাহ তার গলার গামছা দিয়ে আমার গলায় পেঁচিয়ে ফেলে। এরপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে যখন জ্ঞান ফিরেছে তখন দেখি আমি হাসপাতালে শুয়ে আছি। এখন আমি চোখে ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছি না।’
কমিরুল মোল্যার মা ফরিদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে মেরে মাটিচাপা দিয়ে কয়জনে মিলে পাড়াচ্ছিল। একটা ছেলে টের পেয়ে তার বাবাকে বললে স্থানীয়রা তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। মরে গেছে মনে করে ওরা আমার ছেলেকে জীবন্ত মাটিচাপা দিচ্ছিল। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’
কমিরুলের বড় ভাই মো. জমিরুল মোল্যা বলেন, ‘আমি রাড়ীখালী বাজারে ভ্যান মেরামত করছিলাম। হঠাৎ কয়েক ব্যক্তি আমার ভাইকে উদ্ধার করে বাজারে নিয়ে এসে বলে নারায়ণপুরের কেউ থাকলে দেখেন এ ব্যক্তির বাড়ি নারায়ণপুর। কাছে গিয়ে দেখি আমার ভাই। এরপর ওদের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি করি।’
আজ সোমবার (২৩ জুন) সকালে হাসপাতালের কর্তব্যরত একজন চিকিৎসক জানান, ওই ব্যক্তিকে গত বৃহস্পতিবার অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ কারণে এখনো তার গলায় ব্যথা রয়েছে এবং শ্বাসরোধ করার কারণে তার চোখে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। এছাড়া অন্য কোনো সমস্যা নেই।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর ভাই ছয়জনকে আসামি করে রবিবার একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।”
এদিকে এলাকাজুড়ে এ ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের দাবি, দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।