Hi

০৫:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৯৭১ সালের পর যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভারতের ২৭ রাজ্যে সামরিক মহড়ার নির্দেশ

গত ১৯৭১ সালের পর ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একাধিক রাজ্যকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বেসামরিক মহড়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার (৭ মে) থেকে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে এই মহড়া শুরু হচ্ছে। আচমকা বিমান হামলার পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে, সেই অনুশীলন চলবে দেশজুড়ে। বাদ নেই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গও।

ভারতের ২৭টি রাজ্য এবং আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ২৫৯টি স্থানে এই মহড়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মোট ২৩টি জেলা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী মহড়ার অংশ হিসাবে থাকবে সাইরেন বাজিয়ে সতর্কতা, ব্ল্যাক আউট পরিস্থিতিতে নাগরিকদের আচরণ, জরুরি অবস্থায় এলাকা ফাঁকা করার মহড়া। বাঙ্কার, ট্রেঞ্চ বা গর্ত পরিষ্কার ও রেডি রাখা, অস্থায়ীভাবে যেখানে আশ্রয় নেওয়া যাবে।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মহড়ায় অংশ নেবেন জেলাশাসকসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা, নাগরির সুরক্ষা কর্মী ও হোমগার্ডেরা। এ ছাড়াও মহড়ায় অংশ নিতে বলা হয়েছে এনসিসি ক্যাডেট, নেহরু যুব কেন্দ্র সংগঠনের সদস্য এবং স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের।

যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা, ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোকে ক্যামোফ্লেজ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। যুদ্ধকালীন সময়ের মতো আলোকনিরোধক পর্দা ও কৌশল ব্যবহার করতে হবে। নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হামলা হলে কীভাবে এলাকাবাসী দ্রুত আশ্রয়স্থলে যাবেন, তা অনুশীলনের মাধ্যমে জানাতে হবে।

এছাড়াও বুধবারের মহড়ায় বিমান হামলার সময়ে সতর্কতামূলক সাইরেন ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি রাতে হামলার ক্ষেত্রে যুদ্ধবিমানের খবর পাওয়া মাত্র যাতে হঠাৎ করে সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ করে শত্রু বিমানবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া যায়, তারও মহড়া করতে বলা হয়েছে।

এর আগে রোববার রাত ৯টার দিবে আধ ঘণ্টার জন্য পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্টে সব আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট ড্রিল’ করেছে সেনাবাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের আগে থেকেই এ নিয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, তারা যেন আলোকিত বা দূর থেকে চোখে পড়ে এমন কোনো বস্তু বা আলো ব্যবহার না করেন ওই সময়ে। সাধারণত যুদ্ধের সময় বিপক্ষের নজর এড়াতে বা বিপক্ষের বায়ুসেনাকে বিভ্রান্ত করতে বিস্তীর্ণ এলাকার আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়।

১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ও নাগরিকদের এমন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তারপর প্রায় ৫৫ বছর পর ফের দেশবাসীকে বেসামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই মহড়া নিয়ে অনেকের মধ্যেই ভয় বা গুজব ছড়াতে পারে। কেউ বলছেন, যুদ্ধ লাগতে চলেছে, কেউ বলছে বিমান হামলা হবে। কিন্তু সরকার বারবার জানাচ্ছে—এটি একটি অনুশীলন মাত্র। যুদ্ধ বাধুক বা না বাধুক, প্রস্তুত থাকা আবশ্যক।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘আজকের দিনে যুদ্ধ শুধু সীমানার মধ্যে হয় না। সাইবার যুদ্ধ, মানসিক যুদ্ধ এবং নাগরিক পরিকাঠামোর ওপরও হামলা হতে পারে। সেই জন্যই এই মহড়া।’

ট্যাগ :
লেখক সম্পর্কে তথ্য

পলাতক হাসিনার জন্মদিন পালন ও গোপন বৈঠক, কলেজ অধ্যক্ষ বেলাল গ্রেফতার

১৯৭১ সালের পর যুদ্ধ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভারতের ২৭ রাজ্যে সামরিক মহড়ার নির্দেশ

আপডেট : ১১:২৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

গত ১৯৭১ সালের পর ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় একাধিক রাজ্যকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বেসামরিক মহড়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার (৭ মে) থেকে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে এই মহড়া শুরু হচ্ছে। আচমকা বিমান হামলার পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে, সেই অনুশীলন চলবে দেশজুড়ে। বাদ নেই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গও।

ভারতের ২৭টি রাজ্য এবং আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ২৫৯টি স্থানে এই মহড়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মোট ২৩টি জেলা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী মহড়ার অংশ হিসাবে থাকবে সাইরেন বাজিয়ে সতর্কতা, ব্ল্যাক আউট পরিস্থিতিতে নাগরিকদের আচরণ, জরুরি অবস্থায় এলাকা ফাঁকা করার মহড়া। বাঙ্কার, ট্রেঞ্চ বা গর্ত পরিষ্কার ও রেডি রাখা, অস্থায়ীভাবে যেখানে আশ্রয় নেওয়া যাবে।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মহড়ায় অংশ নেবেন জেলাশাসকসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা, নাগরির সুরক্ষা কর্মী ও হোমগার্ডেরা। এ ছাড়াও মহড়ায় অংশ নিতে বলা হয়েছে এনসিসি ক্যাডেট, নেহরু যুব কেন্দ্র সংগঠনের সদস্য এবং স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের।

যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা, ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোকে ক্যামোফ্লেজ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। যুদ্ধকালীন সময়ের মতো আলোকনিরোধক পর্দা ও কৌশল ব্যবহার করতে হবে। নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, হামলা হলে কীভাবে এলাকাবাসী দ্রুত আশ্রয়স্থলে যাবেন, তা অনুশীলনের মাধ্যমে জানাতে হবে।

এছাড়াও বুধবারের মহড়ায় বিমান হামলার সময়ে সতর্কতামূলক সাইরেন ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি রাতে হামলার ক্ষেত্রে যুদ্ধবিমানের খবর পাওয়া মাত্র যাতে হঠাৎ করে সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ করে শত্রু বিমানবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া যায়, তারও মহড়া করতে বলা হয়েছে।

এর আগে রোববার রাত ৯টার দিবে আধ ঘণ্টার জন্য পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্টে সব আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট ড্রিল’ করেছে সেনাবাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের আগে থেকেই এ নিয়ে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, তারা যেন আলোকিত বা দূর থেকে চোখে পড়ে এমন কোনো বস্তু বা আলো ব্যবহার না করেন ওই সময়ে। সাধারণত যুদ্ধের সময় বিপক্ষের নজর এড়াতে বা বিপক্ষের বায়ুসেনাকে বিভ্রান্ত করতে বিস্তীর্ণ এলাকার আলো নিভিয়ে ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়।

১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়ও নাগরিকদের এমন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তারপর প্রায় ৫৫ বছর পর ফের দেশবাসীকে বেসামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই মহড়া নিয়ে অনেকের মধ্যেই ভয় বা গুজব ছড়াতে পারে। কেউ বলছেন, যুদ্ধ লাগতে চলেছে, কেউ বলছে বিমান হামলা হবে। কিন্তু সরকার বারবার জানাচ্ছে—এটি একটি অনুশীলন মাত্র। যুদ্ধ বাধুক বা না বাধুক, প্রস্তুত থাকা আবশ্যক।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘আজকের দিনে যুদ্ধ শুধু সীমানার মধ্যে হয় না। সাইবার যুদ্ধ, মানসিক যুদ্ধ এবং নাগরিক পরিকাঠামোর ওপরও হামলা হতে পারে। সেই জন্যই এই মহড়া।’